• কমিশনের নির্দেশে নিয়োগ নিয়ে চাপে প্রশাসন
    আনন্দবাজার | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • বুথ লেভেল আধিকারিক (বিএলও) নিয়োগ নিয়ে আরও চাপ বাড়ল জেলা প্রশাসনগুলির উপরে। সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচন কমিশন যে নির্দেশ তাদের দিয়েছে, তাতে বর্ধিত ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা অনুযায়ী আরও বেশি নিয়োগ করতে হবে বিএলও। এমনিতেই এই কাজে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নিয়োগ নিয়ে যে টানাপড়েন আগে হয়েছিল, তা আবারও হতে পারে বলে আশঙ্কা জেলা-কর্তাদের। পাশাপাশি, জেলা কর্তাদের উদ্দেশে কমিশনের বার্তা— ১১ সেপ্টেম্বর থেকে শেষ ভোটার তালিকা এবং গত বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) তালিকার ‘ম‍্যাপিং’ শুরু করতে হবে।

    কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগে প্রতি ভোটকেন্দ্র বা বুথে নির্ধারিত সর্বাধিক ১৫০০ জন ভোটার সংখ্যা এখন কমে হচ্ছে ১২০০। ফলে জেলাভিত্তিক ভাবে বুথ সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব তৈরি হয়েছে। সেই খসড়া অনুযায়ী, নতুন বুথ বিন্যাসে আরও ১৩ হাজার ৮৫৩টি বুথ বাড়ছে। অর্থাৎ, আগের হিসেবে রাজ্যে মোট বুথের সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার ৬৮১টি। প্রস্তাবিত নতুন বিন্যাসে রাজ্যে মোট বুথ সংখ্যা হচ্ছে ৯৪ হাজার ৪৯৭টি। ফলে প্রায় ১৫ হাজার বিএলও নতুন করে নিয়োগ করতে হবে জেলা প্রশাসনগুলিকে। জেলা-কর্তাদের ব‍্যাখ‍্যা, একটি বুথপিছু এক জন বিএলও থাকবেন। রিজার্ভ রাখা হবে কিছু সংখ্যক বিএলও-কে। আবার ১০টি বুথপিছু এক জন করে বিএলও সুপারভাইজ়ারওনিয়োগ করা হবে।

    প্রসঙ্গত, পুনর্বিন‍্যাসের কাজটি করা হয়েছিল জেলা প্রশাসনগুলির প্রস্তাব অনুযায়ী। তাতে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বুথ বাড়ছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। সেখানে আগে বুথ সংখ্যা ছিল ৮৮৫৯টি। সেখানে আরও ১৫৫৩টি নতুন বুথ বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে। সবচেয়ে কম সংখ্যক বুথ বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে কালিম্পংয়ে, ১৬টি। প্রস্তাবিত খসড়ায় জানানো হয়েছে, ৩৭টি বুথ সংযুক্ত অথবা বাদ দেওয়া হচ্ছে। পুনর্গঠিত হচ্ছে ১২৫৩টি বুথ। ৭০৩টি বুথ স্থানান্তর করার প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। এই খসড়া নিয়ে গত মাসের শেষে সর্বদলীয় বৈঠক করেছিল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনীআধিকারিকের (সিইও) কার্যালয়। তাতে খসড়ার উপরে আপত্তি বা সংশোধনী প্রস্তাব গত ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছিল স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলিকে। ফলে মনে করা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখে খসড়া চূড়ান্ত করার কাজ হবে।

    ম‍্যাপিংয়ের আওতায় ২০০২ সালে প্রকাশিত এসআইআরের ভোটার তালিকার সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে চলতি বছর জানুয়ারিতে প্রকাশিত শেষ ভোটার তালিকা। দুই তালিকার মধ‍্যে যত জন ভোটারের নাম মিলে যাবে, তত জনকে চিহ্নিত করে রাখবে কমিশন। কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, এতে অন্তত ৬০% ভোটার চিহ্নিতকরণের কাজ এগিয়ে থাকবে আনুষ্ঠানিক ভাবে এসআইআর শুরুর আগেই। আজ, বুধবার দিল্লিতে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার, বাকি দুই নির্বাচন কমিশনার এবং কমিশনের পদস্থ কর্তারা বৈঠক করবেন পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশের সিইও-দের সঙ্গে। প্রস্তাবিত এসআইআর শুরুর আগে একে শেষ মুখোমুখি বৈঠক বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের দাবি, এই বৈঠকেই এসআইআরের জন্য সব প্রস্তুতি খতিয়ে দেখবে কমিশন। দেবে প্রয়োজনীয় নির্দেশও।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)