'ওর প্রেমিকা আছে আমাদের কেন নেই?' সারাদিন ফোনে বান্ধবীর সঙ্গে গল্প করায় যুবককে খুন দুই বন্ধুর
আজকাল | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বেঙ্গালুরুতে সম্প্রতি এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড। নির্মম এই ঘটনায় প্রাণ হারালেন ২০ বছর বয়সী এক যুবক, ইসমাইল পাতওয়েগার। ঘটনার জেরে পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় তাঁর রুমমেট এবং আরেক বন্ধু মূল অভিযুক্ত৷ তাদের হাতে নিহত হয়েছেন ইসমাইল। অভিযোগ অনুযায়ী, তাঁর নিজেরই প্রেমিকার সঙ্গে ফোনে কথা বলার কারণে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। আর এই ঘটনা ঘিরে শহরজুড়ে হুলুস্থুল।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে রোববার ভোররাতে। বেঙ্গালুরুর ব্যাপ্পানাহাল্লি এলাকার প্রগতি লে-আউটের কাছে একটি রেলওয়ে আন্ডারপাসের কাছে। মৃত যুবক ইসমাইল কর্নাটকের বিজাপুর জেলার বাসিন্দা ছিলেন। হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত দুইজনের মধ্যে পুণীত নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অপর অভিযুক্ত প্রতাপ এখনও পলাতক।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র এক সপ্তাহ আগে ইসমাইল বেঙ্গালুরুতে আসেন এবং বানাসওয়াড়ি এলাকার ‘শ্রী হরি জেন্টস পি.জি’-তে থাকতে শুরু করেন। খবর অনুযায়ী তিনি এবং পুণীত একটি কারখানায় একসঙ্গে কাজ করতেন, এমনকী তাঁদের বন্ধুত্বও ছিল। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই ইসমাইল এক যুবতীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এরপর তাঁর মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাঁর সঙ্গে নিয়মিত ফোনে কথা বলতে শুরু করেন। এই যুবতী তিনিই যাঁকে পুণীত ভালোবাসত৷ বিষয়টি পুণীতের বন্ধু প্রতাপের চরম রাগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
খবর অনুযায়ী, রবিবার রাত ৩ টার দিকে পুণীত ও প্রতাপ ডোড্ডানেকুন্ডি এলাকায় মদ্যপান করছিলেন। সে সময় ইসমাইল সেখানে পৌঁছালে আবারও তাঁদের মধ্যে তীব্র বচসা শুরু হয়। একপর্যায়ে, উত্তেজনার মধ্যে তারা ইসমাইলকে চলন্ত ট্রেনের সামনে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ইসমাইলের। পরে অভিযুক্তরা তাঁর মৃতদেহ আবার রেললাইনের ওপর ফেলে রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়, যাতে পুরো ঘটনাটি দুর্ঘটনা বলে মনে হয়।
পরে ঘটনার পরদিন সকাল ৯ টার দিকে পি.জি’র মালিক বি লক্ষ্মীনারায়ণ রেললাইনে একটি অজ্ঞাত মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর পান এবং সেটি ইসমাইলের বলে শনাক্ত করেন। এরপর তিনি রেল পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে জানতে পারে যে মৃত্যুর আগে পুণীত ইসমাইলের সঙ্গে ছিলেন।
পরবর্তীতে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে পুণীত হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল না, কিন্তু মদ্যপ অবস্থায় ঝগড়ার একপর্যায়ে তারা এই ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নেন।
বর্তমানে ঘটনার তদন্ত করছে ব্যাপ্পানাহাল্লি রেলওয়ে পুলিশ। পুণীতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং প্রতাপকে ধরতে অভিযান জারি রয়েছে। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, পুণীত ও ইসমাইল একই কক্ষে থাকতেন এবং ফোনালাপ নিয়ে তাদের মধ্যে আগেও একাধিকবার বিবাদ হয়েছিল।