সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত-মায়ানমার সীমান্তে কাঁটাতার আপত্তি জানিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামল মণিপুরের নাগা কাউন্সিল সংগঠন। ‘বাণিজ্য বন্ধে’র ডাক দিয়ে অবরোধ করা হল মণিপুরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া দুটি জাতীয় সড়ক। নাগা আদিবাসীদের অবরোধের জেরে বুধবার সকাল থেকে থমকে পণ্যবাহী একের পর এক ট্রাক। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর মণিপুর সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার আগে এই ঘটনায় নতুন করে অশান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দু’বছরের বেশি সময় ধরে কুকি ও মেতেই সম্প্রদায়কের হিংসায় রণক্ষেত্র মণিপুর। সেই গণগনে আগুনের আঁচ সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা ধিমে হয়েছে ঠিকই তবে পুরোপুরি নেভেনি। অভিযোগ উঠেছিল, এই হিংসায় উসকানি দিতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সরবরাহ হয়েছিল মায়ানমার থেকে। তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ভারত-মায়ানমারের ১,৬৪৩ কিমি খোলা সীমান্তে ফেন্সিং বা কাঁটা তারের বেড়া দেওয়ার। সে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। তাতেই সমস্যা বেড়েছে নাগা সম্প্রদায়ের। নিয়ম অনুযায়ী, ভারত-মায়ানমার সীমান্ত থেকে ১৪ কিলোমিটার পর্যন্ত অবাধ যাতায়াতের অনুমতি থাকে স্থানীয়দের জন্য। নাগাদের আশঙ্কা সীমান্তে বেড়া দেওয়া হলে অতীতের মতো অবাধ যাতায়াত বাধাপ্রাপ্ত হবে। যা মণিপুর, নাগাল্যান্ড, অরুণাচলপ্রদেশ ও মায়ানমারে বসবাসকারী নাগা সম্প্রদায়ের সংস্কৃতির উপর সরাসরি আঘাত। জানা যাচ্ছে, এই ইস্যুতে গত ২৬ আগস্ট কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল নাগা কাউন্সিল। তবে তাদের দাবিকে মান্যতা দেওয়া হয়নি। এরই প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধের পথে হাঁটল নাগারা।
উল্লেখ্য, যে দুটি রাস্তা অবরোধ করা করা সেই জাতীয় সড়ক-২ ও ৩৭ মণিপুর-সহ গোটা পূর্বাঞ্চলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২ নম্বর জাতীয় সড়ক নাগাল্যান্ডের ডিমাপুর হয়ে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল পর্যন্ত যায়। অর্থাৎ মণিপুর নাগাল্যান্ড ও মিজোরামের মধ্যে যোগাযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক। মণিপুরের খাদ্য, ওষুধ-সহ সমস্ত রকম পণ্য সরবরাহ বন্ধ হয়েছে অবরোধের জেরে। অন্যদিকে, ৩৭ নম্বর জাতীয় সড়ক অসমের বদরপুর হয়ে ইম্ফলকে যুক্ত করেছে। দুটি সড়কই পরিবহণ ও বাণিজ্যের জন্য ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ।