হাসিমারা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে গুলিবিদ্ধ সেনা জওয়ান, সব শেষ মুহূর্তে...
আজকাল | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: আচমকাই গুলি চলল উত্তরবঙ্গের হাসিমারা বিমান ঘাঁটির এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল অফিসের কাছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক জওয়ানের। মৃতের নাম পুলকিত তাক, বয়স ২৭। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে তেমনটাই। ঘটনা প্রসঙ্গে প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত জানা গিয়েছে, ওই সেনা জওয়ানের বুকে গুলির আঘাত লাগার কারণেই মৃত্যু হয়েছে।
খবর অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে নিজেই নিজেকে গুলি করে আত্মঘাতী হতে পারেন পুলকিত তাক। যদিও এবিষয়ে হাসিমারা বায়ুসেনার তরফে এখনও কিছু জানানো হয়নি। নিহত সেনা জওয়ানের দেহ হাসিমারা ফাঁড়ির পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে ময়নাতদন্তের পর দেহ সেনা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বুধবার ভোর তিনটে নাগাদ এই ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাতে হাসিমারা বায়ুসেনা ঘাঁটির এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল অফিসের সামনে প্রহরারত অবস্থায় ছিলেন পুলকিত তাক। আচমকা গুলি চলার আওয়াজ শুনে ঘটনাস্থলে চলে আসেন সেনার অন্যান্য কর্মীরা। তাঁরা সেখানে পৌঁছে দেখতে পান পুলকিত তাক তাঁর পোস্টের সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন।
পাশেই পড়ে রয়েছে তাঁর আগ্নেয়াস্ত্র এবং কার্তুজের খালি খোল। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। ওই সেনা জওয়ানকে দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় হাসিমারা বায়ুসেনার হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরেই জওগাঁও থানার অন্তর্গত হাসিমারা পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ গিয়ে ওই জওয়ানের দেহ আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
জানা গিয়েছে, নিহত জওয়ানের বাড়ি রাজস্থানে। ময়নাতদন্তের পর জওয়ানের দেহ নিয়ে তাঁর বাসভবনের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন বায়ুসেনা কর্মীরা। এবিষয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ পরিতোষ মণ্ডল বলেন, 'হাসিমারা সেনা ঘাঁটি থেকে পুলকিত তাক নামে এক সেনা জওয়ানের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালে আনা হয়। তাঁর শরীরে গুলির আঘাত পাওয়া গিয়েছে। গুলি তাঁর বুকে আঘাত করে ঢুকে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে। হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর দেহ সেনার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।'
উল্লেখ্য, কৌশলগত দিক থেকে হাসিমারা বিমান ঘাঁটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারত-চীন যুদ্ধের পর ১৯৬৩ সালে এই ঘাঁটি তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধেও হাসিমারার বায়ুসেনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এরপর থেকেইএই বিমানঘাঁটিটিকে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়।
এই বিমান ঘাঁটির কাছাকাছি রয়েছে নেপাল, ভুটান এবং চীন। যা সংবেদনশীল চিকেনস নেক কড়িডোরের সুরক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘাঁটিতে রয়েছে 'রাফাল'-এর মতো উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন আধুনিক যুদ্ধবিমান। যার কার্যকরী ক্ষমতা গোটা বিশ্বের কাছে প্রমাণিত।