• বাংলা-সহ গোটা দেশে ভোটার তালিকা পরিমার্জন প্রক্রিয়া শুরু পুজোর পরেই! অক্টোবর ‘লক্ষ্য’, বৈঠকে জানাল নির্বাচন কমিশন
    আনন্দবাজার | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা দেশে এ বার শুরু হবে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় পরিমার্জন (এসআইআর)-এর কাজ। আলোচনা, গুঞ্জন আগে থেকেই চলছিল। এ বার তাতে সিলমোহর দিয়ে দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সব ঠিক থাকলে আগামী মাসে, অর্থাৎ অক্টোবরে পুজোর মরসুমের পরেই দেশ জুড়ে শুরু হতে পারে এসআইআর।

    আগামী ২ অক্টোবর দুর্গাপুজো শেষ হচ্ছে। এর পরে রয়েছে লক্ষ্মীপুজো, কালীপুজো। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, পুজোর মরসুম মিটে গেলেই দেশ জুড়ে এসআইআর শুরু করতে পারে তারা।

    বিহারের পরে অন্য রাজ্যগুলিতেও যে এসআইআর শুরু হতে পারে, সে বিষয়ে আগেই আভাস দিয়ে রেখেছিল কমিশন। তবে দিনক্ষণ এ যাবৎ স্পষ্ট ছিল না। এ বার কমিশন সেই আভাসও দিয়ে দিল। আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। তার আগে ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। এর আগে ২০০২ সালে পশ্চিমবঙ্গে শেষ এসআইআর হয়েছিল। ২০০২ সালের এসআইআর অনুসারে ভোটার তালিকা আগেই প্রকাশ্যে এনেছে কমিশন। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর থেকে এলাকাভিত্তিক সেই তালিকা ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে। এ বার দু’দশকেরও বেশি সময় পরে পশ্চিমবঙ্গে ফের এসআইআর শুরু করতে উদ্যোগী কমিশন।

    সম্প্রতি বিহারে এসআইআর-এর কাজ নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। এসআইআর চলাকালীন কমিশনের খসড়া তালিকা থেকে প্রায় ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ পড়েছিল। তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল সুপ্রিম কোর্টেও। বস্তুত, কমিশন প্রথমে জানিয়েছিল এসআইআর প্রক্রিয়ায় ব্যক্তি পরিচয়ের প্রামাণ্য নথি হিসাবে আধার কার্ডকে গণ্য করা হবে না। তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠেছিল। পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল-সহ অন্য বিজেপিবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও এ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিল।

    তৃণমূলনেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার এই নিয়ে নিশানা করেছেন কমিশনকে। আধার কার্ডকে কেন এসআইআর-এর জন্য কমিশন বিবেচনা করছে না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। বাস্তব পরিস্থিতির কথা বোঝাতে গিয়ে মমতা প্রশ্ন তুলেছিলেন, ৫০ বছর আগে যাঁরা জন্মেছেন, তাঁদের জন্মের শংসাপত্র পাওয়া যাবে কী করে? ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে ‘এনআরসি’ হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি।

    তবে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, ব্যক্তিপরিচয়ের প্রামাণ্য নথি হিসাবে আধার কার্ড ব্যবহার করা যাবে। তবে এই নিয়ম আপাতত শুধু বিহারের জন্যই। শীর্ষ আদালত এ-ও উল্লেখ করেছে, আধার কার্ড কখনওই নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। শুধু ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে আধার কার্ড। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, আধার কার্ডও এখন ‘আইডেন্টিটি’। রাজ্যবাসীকে তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন, ‘‘যাঁদের আধার কার্ড নেই, তাঁরা করিয়ে নেবেন।’’ গত মঙ্গলবারও নিজের অবস্থান বুঝিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “এসআইআর দুই-তিন মাসে হয় না, তিন-চার বছর সময় লাগে।”

    এই আবহে বুধবার দিল্লিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দফতরে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে নিয়ে ওই বৈঠক হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। অপর নির্বাচন কমিশনারেরা এবং নির্বাচন কমিশনের অন্য আধিকারিকেরাও ছিলেন বুধবারের বৈঠকে। এসআইআর সংক্রান্ত বিষয়েই ওই বৈঠক ডাকা হয়েছিল।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)