‘চোখে জল নিয়ে নাচা যায় না’, মণিপুরে প্রধানমন্ত্রীর জন্য অনুষ্ঠান: প্রতিবাদে শামিল জো ও কুকিদের সংগঠন
বর্তমান | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নয়াদিল্লি ও কোহিমা: প্রায় আড়াই বছর পর আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর হিংসাদীর্ণ মণিপুরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁকে স্বাগত জানাতে একাধিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে প্রশাসন। সরকারি এই উদ্যোগের কড়া সমালোচনায় সরব হল কুকি ও জো গোষ্ঠীর একাধিক সংগঠন। তাদের মতে, নৃত্যানুষ্ঠানে যোগ না দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের কষ্ট লাঘবের জন্য উদ্যোগী হওয়া উচিত প্রধানমন্ত্রীর।
চূড়াচাঁদপুর জেলার গাংতে ছাত্র সংগঠনের বক্তব্য, ‘প্রধানমন্ত্রীকে আমরা অবশ্যই স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু, চোখে জল নিয়ে তাঁর সামনে নাচতে পারব না।’ তবে তাদের আশা, মোদি আসায় গোষ্ঠী সংঘর্ষে বিধ্বস্ত মানুষজনের ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ পড়বে। সুর চড়িয়েছে ইম্ফল হামের ডিসপ্লেসড কমিটিও। তারা জানিয়েছে, আমাদের শোক শেষ হয়নি। চোখের জল শুকোয়নি। এই পরিস্থিতিতে আনন্দে নেচে ওঠা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাদের সাফ কথা, জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের বদলে প্রধানমন্ত্রীর উচিত ক্ষতিগ্রস্তদের সময় দেওয়া। তাদের সঙ্গে কথা বলা। এই গোষ্ঠীর মূল সংগঠনের কুকি ইনপি মণিপুর বলেছে, প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই স্বাগত জানাতে হবে। কিন্তু, এই সফরে কুকি-জো সম্প্রদায়কে সুবিচার দিতে হবে। পাশাপাশি, সমস্যার স্থায়ী সমাধানেরও দাবি জানিয়েছে তারা।
প্রধানমন্ত্রী স্থানীয়দের মনে কথা শুনবেন বলে আশাবাদী মণিপুরবাসী। ইম্ফল পূর্ব জেলার বাসিন্দা সইবাম রিয়েগান জানিয়েছেন, মোদি এলে আমাদের মনের কথা বলা সুযোগ পাব। বহু দাবি-দাওয়া অপূর্ণ। তাছাড়া, সংঘর্ষের জেরে সাধারণ মানুষের জীবনও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে, মহিলা সংগঠন ইমাঘি মেইরার দাবি, মেইতেইরা যাতে জাতীয় সড়ক দিয়ে নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে, প্রধানমন্ত্রীকে সেই ব্যবস্থা করতে হবে। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে মে মাসে মেইতেই ও কুকি-জো গোষ্ঠীর সংঘর্ষ শুরু হয়। হিংসার বলি হন ২৬০ জনের বেশি মানুষ। ভিটেছাড়া বেশ কয়েক হাজার। এন বীরেন সিংয়ের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের পতনের পর উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি রয়েছে। এরমধ্যে লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মণিপুর দুই-আড়াই বছর ধরে জ্বলছে। আর প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন এখন! প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনার দায়িত্ব ছিল অনেক আগেই সেখানে যাওয়া। মণিপুরে আগামী ভোটে মানুষ এর জবাব দেবে।