• ভোটক্রয়ে বিজেপির খরচ জনপ্রতি ১৫-২০ কোটি! অভিযোগ অভিষেকের, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ক্রস ১৩
    বর্তমান | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা ও নয়াদিল্লি: ফল ঘোষণার পর কেটে গিয়েছে ২৪ ঘণ্টা। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ক্রস ভোটিং নিয়ে চলছে তুমুল রাজনৈতিক তরজা। ক্রস ভোটিংয়ের জেরে বিরোধীদের ১৩ জনের সমর্থন গিয়েছে এনডিএ প্রার্থী সি পি রাধাকৃষ্ণনের ঝুলিতে। তিনি ৪৫২টি ভোট পেয়ে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। আর ‘ইন্ডিয়া’ প্রার্থী প্রাক্তন বিচারপতি বি সুদর্শন রেড্ডির দৌড় থেমেছে ৩০০টি ভোটে। কিন্তু কোন ১৩টি ভোট ইন্ডিয়া শিবিরের ঝুলি থেকে এনডিএ শিবিরে গিয়েছে, তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এই প্রেক্ষাপটেই বিজেপির বিরুদ্ধে টাকা খরচ করে ভোট কেনার অভিযোগ তুললেন লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তাঁর সরাসরি মন্তব্য, বিজেপি অনেক টাকার বস্তা নিয়ে নেমেছিল। চার-পাঁচজনের সঙ্গে কথা বলে আমি বুঝতে পেরেছি, এক-একজনের ভোট কিনতে ১৫-২০ কোটি টাকা খরচ করেছে বিজেপি। কিন্তু ওরা ভুলে গিয়েছে, জনপ্রতিনিধি কেনা যায় কিন্তু জনতাকে কেনা যায় না।

    এর আগে ২০২১ সালের বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে টাকার খোলা এবং মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড নির্বাচনেও বিপুল টাকা খরচ করে বিধায়ক কেনাবেচা করে সরকার ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা বিজেপি করেছে বলে তোপ দেগেছেন অভিষেক। তবে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রাজ্যসভা ও লোকসভা মিলিয়ে তৃণমূলের ৪১ জন সদস্য (বসিরহাটের হাজি নুরুল ইসলাম প্রয়াত) ইন্ডিয়া জোটের প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছেন, দাবি তৃণমূলের লোকসভার দলনেতার। তবে তাঁর খোঁচা, আম আদমি পার্টির মতো কয়েকটি দল বিজেপিকে সমর্থন করছে। আপের একজন মহিলা সাংসদ অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে কথা বলেন এবং বিজেপিকে সমর্থন করেন। ফলে কয়েকজন বিজেপিতে নাম লিখিয়েই দিয়েছেন।

    অন্যদিকে, ক্রস ভোটিং নিয়ে তদন্তের দাবি করেছেন কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি। তিনি বলেন, ‘ক্রস ভোটিং আসলে বিশ্বাসভঙ্গের শামিল। এই ঘটনা আমাদের অভ্যন্তরীণ একতাকেই প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।’ তবে বিষয়টি নিয়ে ইন্ডিয়া শিবিরকে খোঁচা দিতে ছাড়ছে না বিজেপি। দলের নেতা তথা সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘বিবেকের ডাকে সাড়া দিয়ে এনডিএ প্রার্থীকে বিরোধী শিবিরের যেসব সাংসদ ভোট দিয়েছেন, তাঁদের বিশেষ ধন্যবাদ।’ তবে এত কিছুর পরেও বিরোধী ঐক্য অটুট বলে দাবি করেছে কংগ্রেস। দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, ‘বিরোধীরা একজোট। তাঁরা যেভাবে একসঙ্গে লড়াই করেছেন, তা নিঃসন্দেহে তারিফযোগ্য।’ তাঁর কথায়, ‘২০২২ সালে বিরোধীরা ২৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। এবার সেই ভোট বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।’ 

    বিরোধীরা মনে করছে, ৩১৫টি ভোট পেলেই তাদের লক্ষ্য পূর্ণ হতো। সেক্ষেত্রে নিজেদের এককাট্টা দেখানোর সুযোগ থাকত। সংসদীয় ইতিহাসে উপরাষ্ট্রপতি পদে পরাজিত প্রার্থী হিসেবে রেকর্ড রয়েছে সুশীল কুমার সিন্ধের। ২০০২ সালে তিনি রেকর্ড ৩০৫টি ভোট পেয়েছিলেন। এবার বিরোধীরা আশা করেছিলেন, সেই রেকর্ড ভাঙতে পারবেন তাঁদের প্রার্থী বি সুদর্শন রেড্ডি।
  • Link to this news (বর্তমান)