দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি: ‘নেপাল থেকে চলে আসার কোনও ইচ্ছে নেই। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, থাকব নিজের দেশেই। দুর্নীতিবাজ সরকারের পতন হয়েছে। নতুন সরকার গঠন হলেই যাবতীয় দুর্নীতি বন্ধ হবে। শান্তি ফিরবে।’ নেপাল থেকে কোনওমতে এটুকু কথাই বলতে পারলেন সীতা লামিছানে। ফের কেটে গেল লাইন। পর পর তিনবার। হোয়াটসঅ্যাপ কার্যত বন্ধ। সাধারণ ফোন কল পরিষেবাও অমিল। সেদেশের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ওলি সরকার পতনের পর নেপালে সোশ্যাল মিডিয়া পরিষেবা আংশিক চালু হয়েছে। কিন্তু তা সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি। আর সেই কারণে নেপালের লুম্বিনির বাসিন্দা সীতা লামিছানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে মহা সমস্যায় পড়েছেন বিন্দু রায়ামাঝি। সীতার আত্মীয় বিন্দুও নেপালের লুম্বিনির বাসিন্দা। থাকেন দিল্লিতে। সেই সুবাদেই সীতার সঙ্গে কথা বলাতে কোনওমতে গ্রুপ কলে কানেক্ট করাতে পেরেছিলেন। কিন্তু কয়েক মিনিট কথা বলার পরেই লাইন গেল কেটে। বহু চেষ্টার পরেও আর যোগাযোগ করা যায়নি।
ওলি সরকারের পতনের পরেও নেপালে ‘জেন জি’র বিক্ষোভ বন্ধ হয়নি। বুধবারও নেপালে চরম উত্তপ্ত পরিস্থিতির সাক্ষী থেকেছেন বাসিন্দারা। এহেন অবস্থায় নেপালে থাকা আত্মীয়দের জন্য চিন্তায় তাই ঘুম উড়েছে বিন্দুদের। মাঝেমধ্যে ফোনে লাইন পাওয়া যাচ্ছে। আচমকাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘অনলাইন’ দেখাচ্ছে স্বজনদের। কিন্তু কোনওভাবেই মন-প্রাণ খুলে কথা বলা সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে ভারত, বিশেষত দিল্লিতে থাকা নেপালের মানুষদের একটি বড় অংশ চাইছে, অবিলম্বে ওই দেশে পৌঁছতে। তাতে অন্তত একবার স্বচক্ষে আত্মীয়-পরিজনদের হালহকিকত দেখে আসা যাবে। বিন্দু বলেন, ‘আমরা অনেকেই আগামী সপ্তাহে নেপাল যাব। সেরকমই পরিকল্পনা করা হয়েছে। আশা করছি, এক সপ্তাহের মধ্যে ভারত-নেপাল বিমান পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। যদি না হয়, তাহলে সড়কপথে যাওয়ার চেষ্টা করব।’
এই পরিস্থিতিতে সড়কপথে যাতায়াতের ক্ষেত্রে ভারত সরকারের কাছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতা চাইছেন বিন্দু এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা। প্রতিবেশী রাষ্ট্র অশান্ত হতেই দিল্লিতে নেপাল দূতাবাসের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দিয়েছে পুলিস-প্রশাসন। মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিস বাহিনী। চলছে কড়া নজরদারি।