• দিল্লি থেকে বাংলা চালাতে দেব না, আক্রমণ মমতার
    বর্তমান | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ব্রতীন দাস, জলপাইগুড়ি: ভিন রাজ্যে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যচার, তাঁদের বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে কেন্দ্রের ধারাবাহিক আর্থিক বঞ্চনা—রীতিমতো ইস্যু ধরে ধরে বিজেপি তথা কেন্দ্রের মোদি সরকারকে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার জলপাইগুড়ির সভা থেকে তাঁর দৃপ্ত ঘোষণা, ‘দিল্লির হাতে বাংলার নিয়ন্ত্রণ যেতে দেব না। আমরা ওদের দয়া চাই না। ভিক্ষাও চাই না। বাংলাকে চালাবে বাংলাই।’ আরও বলেন, ‘বাংলাকে কখনও গুজরাতে পরিণত হতে দেব না। ভূলুণ্ঠিত হতে দেব না বাংলার সম্মান। যতদিন বাঁচব, জয় বাংলা বলব। বাংলার ভালো চাই বলেই আমাকে ওরা এত অসম্মান করে। বদনাম করে। কিন্তু এসবে আমার কিছু যায়-আসে না। এটা জানি, আমি না থাকলে লুটেরারা সব লুট করবে। ওরা যত হিংসে করবে, বাংলা তত এগবে।’ 

    এদিন জলপাইগুড়ি শহরের এবিপিসি মাঠে সভা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। বক্তৃতার শুরুতেই তিনি দেশের একাধিক ‘ডাবল ইঞ্জিন’ রাজ্যে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচার নিয়ে সরব হন। ভিন রাজ্যে কর্মরত বাঙালিদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘বেশি করে নিজের ভাষায় কথা বলুন। আমি দেখে নেব,  কার কত সাহস আছে।’ কয়েক মাস আগে উত্তরবঙ্গের একাধিক বাসিন্দাকে অসমের বিজেপি সরকার এনআরসির নোটিশ পাঠিয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘সাহস কম নয়, অসম থেকে নোটিশ পাঠাচ্ছে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়িতে। বাংলায় কথা বললে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আদিবাসী মেয়েরাও রেহাই পাচ্ছেন না। আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, আমরা মাতৃভাষায় কথা বলব। অন্য ভাষাও শিখব। যে রাজবংশী ভাষায় কথা বলে, সে কি অপরাধ করেছে? যার যেমন খুশি, সেই ভাষায় কথা বলুক।’ 

    ইতিমধ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি জানান, ২৪ হাজার পরিযায়ী শ্রমিককে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তারপরই মুখ্যমন্ত্রীর তোপ, ‘বাংলায় যে দেড় কোটি বাইরের শ্রমিক রয়েছেন, আমরা তো তাঁদের কিছু বলছি না। তাঁরা রাজ্য সরকারের সমস্ত প্রকল্পের সুবিধাও পাচ্ছেন। তাহলে আমাদের এখান থেকে যাঁরা ওড়িশা, গুজরাত, মহারাষ্ট্র বা উত্তরপ্রদেশে কাজ করতে গিয়েছেন, তাঁদের মেরে তাড়ানো হবে কেন? এটা আমরা বরদাস্ত করব না।’ নাম না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে তাঁর কটাক্ষ, ‘যিনি জাতপাতে ভাগ করেন, তিনি কখনও দেশের নেতা হতে পারেন না।’ এছাড়া, ১০০ দিনের টাকা বন্ধ করে দেওয়া, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সর্বশিক্ষা মিশন, রাস্তা সংস্কারের টাকা পর্যন্ত না দেওয়ার অভিযোগ এনে কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। 
  • Link to this news (বর্তমান)