• যথেষ্ট হয়েছে, পূর্ব কলকাতার ৫৫০ বেআইনি নির্মাণ নিয়ে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
    বর্তমান | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বছর দুয়েক কেটে গিয়েছে। পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে অন্তত ৫৫০ বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত হলেও পদক্ষেপ করেনি পূর্ব কলকাতা জলাভূমি কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য সরকার। যার জেরে চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ হাইকোর্টের মন্তব্য, ‘যথেষ্ট হয়েছে আর নয়। আদালতে এসে আধিকারিকদের জবাবদিহি করতে হবে।’ 

    রামসর সাইট হিসেবে চিহ্নিত পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগে ২০২৩ সালে মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে। সেই মামলায় জলাভূমি কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই ৫৫০টি বেআইনি নির্মাণ চিহ্নিত করেছে। সেগুলি ভেঙে ফেলে জলাভূমিকে আগের অবস্থায় ফেরানো সংক্রান্ত পদক্ষেপ নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। বুধবার মামলার শুনানিতে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সময় চেয়ে নেয় জলাভূমি কর্তৃপক্ষ। কারণ হিসেবে তাদের আইনজীবী বলেন, ‘পূর্ব কলকাতা জলাভূমি কর্তৃপক্ষের অফিস স্থানান্তর হচ্ছে। রিপোর্ট দেওয়ার জন্য সময় চাই।’

    এই যুক্তি শুনেই চরম ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি সিনহা। বলেন, ‘দু’বছর হতে চলল। কবে ফের জলাভূমি দেখা যাবে? যে গতিতে আপনারা এগচ্ছেন তাতে আমি অসন্তুষ্ট।’ বিচারপতির এই মন্তব্যের পরও রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য সময় চাইতে থাকেন জলাভূমি কর্তৃপক্ষের আইনজীবী। তখনই বিচারপতি পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘আদালত অনেক ধৈর্য দেখিয়েছে। বেআইনি নির্মাণ চলছেই আর আপনারা বসে আছেন। আদালত কেন সেই সমস্যার কথা শুনবে।’ বিচারপতি আরও বলেন, ‘আপনারা যদি না পারেন তাহলে এবার অন্য ব্যবস্থার কথা ভাবতে হবে। আইন অনুযায়ী কাজ করতেই হবে। অফিস স্থানান্তর হচ্ছে বলে কাজ না করে বসে থাকবেন?’ 

    এরপরই বিচারপতি বলেন, ‘কেন আপনাদের আর সময় দেওয়া হবে তার কারণ বলুন? যথেষ্ট হয়েছে। আর নয়। এবার আপনাদের অফিসারদের আদালতে এসে জবাবদিহি করতে হবে।’ এরপরই বিচারপতি বিচারপতি নির্দেশে জানান, আইন অনুযায়ী রাজ্য এবং পূর্ব কলকাতা জলাভূমি কর্তৃপক্ষকেই জলাভূমি পুনরুদ্ধার করতে হবে। একাধিকবার সুযোগ দেওয়ার পরও কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতাই সামনে এসেছে। কোনও অগ্রগতি নেই। আদালত অনেক ধৈর্য দেখিয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিয়ে দায়িত্ব পালন করছে না। এই পরিস্থিতিতে আদালত পূর্ব কলকাতা জলাভূমি কর্তৃপক্ষ চিফ টেকনিক্যাল অফিসারকে ভার্চুয়ালি হাজির থাকতে নির্দেশ দিতে বাধ্য হচ্ছে। ওই আধিকারিককেই এবার রিপোর্ট পেশ করতে হবে। ২২ সেপ্টেম্বর দুপুর সোয়া একটায় ওই আধিকারিককে হাজির থাকতে হবে বলে নির্দেশে উল্লেখ করেছেন বিচারপতি সিনহা। ওইদিন মামলার পরবর্তী শুনানি।
  • Link to this news (বর্তমান)