রক্তাক্ত নেপাল! ‘সতর্ক’ ভারতে নেপালি দূতাবাসের নিরাপত্তার দায়িত্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী
প্রতিদিন | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শেষে নেপালে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে তরুণ প্রজন্ম। প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে গোটা দেশ। এহেন বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে আটকে রয়েছেন অন্তত ৪০০ ভারতীয়। আটকে পড়া ভারতীয়দের খোঁজখবর নিতে দিল্লিতে অবস্থিত নেপালের দূতাবাসের সামনে দেখা যাচ্ছে পরিজনদের ভিড়। এর পাশাপাশি দূতাবাসের নিরাপত্তা কঠোর থেকে কঠোরতম করা হয়েছে।
নেপালের পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠছে বুঝতে পেরে সোমবার রাত থেকেই মাণ্ডি হাউস সংলগ্ন দূতাবাস ঘিরে ফেলে দিল্লি পুলিশ। কয়েকশো বাহিনীকে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় দূতাবাস সংলগ্ন রাস্তাও। বুধবার এই নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে। সরকারের তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে। দিল্লি পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে ততদিন দূতাবাস এবং সংলগ্ন এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
নেপালে ‘জেন জি’ আন্দোলন গণবিপ্লবের চেহারা নিয়েছে। গদি ছেড়েছেন বামপন্থী শাসক কেপি শর্মা ওলি। অরাজক দেশের শাসনভার এখন সেনার হাতে। ‘জেন জি’ বিপ্লবের প্রথম দিনেই আন্দোলনকারীরা স্লোগান দিয়েছিলেন — ‘রাজা আউনপার্চা’ অর্থাৎ রাজা ফিরে আসবেই। ওই দিন হাজার হাজার বিক্ষোভকারীরা নেপালের রাজতন্ত্রের আমলের পুরনো পতকার নিচে জড়ো হয়েছিলেন। নেপালের সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিদগেল জানিয়েছেন, আপাতত দেশের শান্তি-শৃঙ্খলার দায়িত্ব নিচ্ছে বাহিনী। এরই সঙ্গে তিনি নীরবেই যেন রাজতন্ত্র ফেরার বার্তা দিয়ে যান দেশবাসীকে।
অন্যদিকে, নেপালের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকিকে বেছে নিয়েছে ‘জেন জি’। ৫০০০ হাজার যুব আন্দোলনকারী একটি ভারচুয়াল বৈঠকে কারকিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসাবে বেছে নিয়েছে। অন্তর্বতী নেতা হিসাবে প্রাথমিকভাবে কাঠমান্ডুর মেয়র বলেন্দ্র শাহ নাম উঠছিল। জেন জি-র তরফে তাঁর সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি সাড়া দেননি। নেপালের সংবাদমাধ্যমকে ‘জেন জি’র এক প্রতিনিধি জানান, “যেহেতু তিনি (বলেন শাহ) আমাদের ফোন ধরেননি, তাই আলোচনা করে অন্য নামে চলে যাই। সবচেয়ে বেশি সমর্থন মেলে সুশীলা কারকির পক্ষে।”
উল্লেখ্য, সুশীলা কারকি সম্মতি দিলেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। এর জন্য প্রথমে তাঁকে সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেলের সঙ্গে দেখা করতে হবে। এরপর প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পৌডেল অনুমোদন দিলে তবেই কুরসিতে বসতে পারবেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি কারকি।