বিজেপিতে লাগাতার ভাঙন! পদ্মশিবির পরিচালিত পঞ্চায়েত দখল তৃণমূলের
প্রতিদিন | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
অসিত রজক, বিষ্ণুপুর: বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েত দখল তৃণমূলের। ভোটের আগে চমক শাসক শিবিরের। বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে ততই জেলাজুড়ে চড়ছে রাজনীতির পারদ। বিরোধী বিজেপি শিবিরে ইতিমধ্যেই ভাঙন শুরু হয়েছে। জেলাজুড়ে বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসার জোয়ার দেখা যাচ্ছে।
সোনামুখী বিধানসভার পর এই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল ওন্দা বিধানসভার অন্তর্গত ওন্দা ব্লকের চিঙানি গ্রাম পঞ্চায়েতে। চিঙানী গ্রাম পঞ্চায়েতে মোট ১৩ সদস্য রয়েছেন। গত পঞ্চায়েত ভোটে তার মধ্যে সাতটি আসনে জয় পায় বিজেপি। চারটি আসন জেতে তৃণমূল। একটি করে আসনে জেতে সিপিআইএম এবং আইএসএফ। নির্বাচনের কয়েক দিনের মধ্যে জয়ী সিপিআইএম সদস্য তৃণমূলে যোগদান করায় মোট আসন সংখ্যা হয় পাঁচ। এদিন তারাপদ পাল ও গণেশ মল্ল নামে দু’জন বিজেপি সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করায় তাঁদের সদস্য সংখ্যা বেড়ে হয় সাতজন। এরপরেই গ্রাম পঞ্চায়েতের দখল বিজেপির হাত থেকে চলে যায় তৃণমূলের হাতে।
তৃণমূলে যোগ দিয়ে তারাপদ পাল এবং গণেশ মল্লের দাবি, বিজেপিতে থেকে মানুষের জন্য কাজ করতে পারছিলেন না। তাই তৃণমূলে যোগদান করেছেন। তাঁরা বলেন, “একশো দিনের কাজ বন্ধ, মানুষের মাথায় ছাদ দিতে পারছি না, রাস্তাঘাট, পানীয় জল সব ক্ষেত্রেই ব্যর্থ হতে হচ্ছে। সেই কারণে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করলাম।” এছাড়াও তাঁদের দাবি, বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখা এবং বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে বলেও কোনও লাভ হচ্ছে না। তাঁদের দাবি, যেসব মানুষের ভোটে তাঁরা জিতেছিলেন তাঁদের জন্য কাজ করতে না পারায় কথা শুনতে হচ্ছে পঞ্চায়েত সদস্যদের। তাই মানুষের কাজ করতেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ।
বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুব্রত দত্তের দাবি, “বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখা এবং সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এতদিন মানুষকে ভুল বুঝিয়ে দলে রেখেছিল। এখন তাঁরা বুঝে গিয়েছেন তাই তৃণমূল কংগ্রেসে স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁরা যোগদান করেছে।” তিনি আরও দাবি করেন, “বিজেপি কর্মীরা বলছেন সৌমিত্র খাঁ যেদিন থেকে এসেছেন, সেদিন থেকে আমরা সঠিক সম্মান পাচ্ছি না।” সাংবাদিক সম্মেলনে সুব্রত দত্ত হুঁশিয়ারি দেন, “অমরনাথ শাখা আপনি তৈরি থাকুন। এই তো সবে আপনার এলাকায় ঢুকেছি। এখনও আরও অনেক চমক আছে।”
অন্যদিকে বিষ্ণুপুর সংগঠনিক জেলার বিজেপি মুখপাত্র দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, “তৃণমূল সরকার পুলিশ প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে, ভয় দেখিয়ে তাঁদেরকে নিয়ে গিয়েছে। আর বিজেপির যে পঞ্চায়েত ছিল তা হাতছাড়া হল কিনা সেটা বলতে পারব না। যিনি আজকে বিজেপি থেকে তৃণমূলে গিয়েছেন, তাঁরা যে আগামী দিন বিজেপিতে আসবেন না তার কী গ্যারান্টি রয়েছে? সেটা সময় বলবে। এসব মিথ্যা নাটক করে মানুষকে দেখাচ্ছে। মানুষ জবাব দেবে।”