অর্ণব আইচ: নেপালের গণ অভ্যুত্থান কি রাশ টানতে পারে সাইবার অপরাধের? এমনই ধারণা গোয়েন্দাদের। তাঁদের মতে, নেপালে বসে চিনের সাইবার অপরাধীরা যে অপরাধ করে চলেছে, তা থেকে রাজ্যের বাসিন্দারা কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন। একই সঙ্গে কমতে পারে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে ভুয়া সিমকার্ড পাচারও।
কয়েকটি সাইবার অপরাধের পিছনে যে চিনা সাইবার অপরাধীরা রয়েছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হন কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দারা। যদিও চিন থেকে নয়, সাইবার অপরাধগুলি হয় নেপালে বসে। নেপালের কাঠমান্ডু ও তার আশপাশের কয়েকটি জায়গায় সাইবার অপরাধীদের হাত ধরেই গজিয়ে ওঠে বেআইনি কলসেন্টার। অভিযোগ উঠেছে, ‘দুর্নীতির নেপালে’ কাঠমান্ডু ও কয়েকটি জেলা পুলিশ পুরো বিষয়টি জানা সত্ত্বেও চিনাদের হাতে তৈরি ওই কলসেন্টারগুলি চলতে বাধা দেয়নি।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, কলকাতা, শিলিগুড়ি ও কয়েকটি জেলা সদর থেকে ভুয়া সিমকার্ড সংগ্রহ করত সাইবার জালিয়াতদের এজেন্টরা। তারাই নেপালের সীমান্ত পেরিয়ে ওই সিমকার্ডগুলি তুলে দিত সাইবার জালিয়াতদের হাতে। ওই বিপুল সংখ্যক ভূয়া সিমকার্ড পৌঁছে দেওয়া হয় বেআইনি কলসেন্টারগুলিতে। কলসেন্টারগুলি চিনা জালিয়াতদের নিয়ন্ত্রিত হলেও সেগুলিতে কাজ করত নেপালি যুবক ও যুবতীরাই। নেপালি ওই যুবক-যুবতীদের ইংরেজির সঙ্গে সঙ্গে হিন্দিও শিখতে হত। এর পর তারা ফোন করত এই রাজ্য-সহ দেশের বাসিন্দাদেরও। বিভিন্ন চিনা লোন অ্যাপের মাধ্যমে ঋণ নেওয়ার জন্য প্রলোভন দেওয়া হতো। কেউ লোন অ্যাপ ডাউনলোড করলেই তাঁর সম্পর্কে তথ্য পূরণ করতে হয়। এর পর তাঁর অ্যাকাউন্টে ঋণ বাবদ কিছু টাকা জমা পড়ে। এর কিছুদিন পর থেকেই ঋণ গ্রহীতার কাছে ফোন আসতে থাকে। তাঁর কাছে বিপুল টাকার সুদ চাওয়া হয়। তিনি ওই টাকা দিতে রাজি না হলে শুরু হয় ব্ল্যাকমেল। গোয়েন্দাদের মতে, নেপালে নতুন প্রজন্ম ফুঁসে উঠেছে দুর্নীতির বিরুদ্ধেও। তাই এই অবস্থায় নেপালে বেআইনি কলসেন্টার চালাতে গিয়ে বেগ পেতে পারে চিনা জালিয়াতরা।