• দিল্লি-এনসিআরে নাশকতার ছক বানচাল, বিস্ফোরক এবং অস্ত্র সহ ধৃত তিন, নেপথ্যে পাক যোগ?
    আজকাল | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিল্লি ও ঝাড়খণ্ড থেকে দুই জনকে সন্ত্রাসবাদী মডিউলের সঙ্গে যোগসাজশ ও দেশবিরোধী কার্যকলাপের পরিকল্পনার অভিযোগে গ্রেপ্তারের একদিন পরই আরও তিনজনকে বৃহস্পতিবার পুলিশের জালে ধরা হল।

    পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার হওয়া তিন জনের মধ্যে একজনকে দিল্লি থেকে, একজনকে মধ্যপ্রদেশ থেকে এবং অপরজনকে তেলেঙ্গানা থেকে ধরা হয়েছে। বর্তমানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এখনও একাধিক স্থানে তল্লাশি চলছে। আরও কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।”

    এর আগে বুধবার দিল্লি থেকে আাফতাব এবং রাঁচি থেকে আশার দানিশকে গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল। পরে রাতে রাজধানী থেকেই আবু বকর ওরফে সুফিয়ানকে আটক করা হয়। এছাড়া মধ্যপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানা থেকে আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যদিও তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

    পুলিশ সূত্রের দাবি, ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের পর খুব শিগগিরই তাদের পরিকল্পনা এবং সন্ত্রাসবাদী মডিউলের সঙ্গে সুনির্দিষ্ট যোগসূত্রের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। ইতিমধ্যে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে যে, অভিযুক্তরা দিল্লি-এনসিআর সহ দেশের একাধিক স্থানে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা করেছিল। তারা ইতিমধ্যেই কিছু কাঁচামাল এবং বিস্ফোরক জোগাড় করেছিল, যা দিয়ে আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) তৈরি করার চেষ্টা চলছিল।

    পুলিশ আরও জানিয়েছে, ধৃতদের কাছ থেকে যে সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে  তামার পাত, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, নাইট্রিক অ্যাসিড, সোডিয়াম বাইকার্বোনেট, সালফার পাউডার, বল বিয়ারিং, বিউকার সেট, সেফটি গ্লাভস, রেসপিরেটরি মাস্ক, স্ট্রিপ ওয়্যারসহ প্লাস্টিকের বাক্স, একটি সার্কিট, মাদারবোর্ড ও ডায়োড।

    একজন অন্য কর্মকর্তা বলেন, “প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এরা AQIS (আল-কায়েদা ইন দ্য ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট) মডিউলের সঙ্গে যুক্ত। এছাড়া তারা আইএসআইএস ও পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। তবে তাদের সুনির্দিষ্ট যোগাযোগ এখনও তদন্তাধীন।”

    উল্লেখযোগ্য, গত বছরের আগস্ট মাসে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল একই ধরনের এক অভিযানে দিল্লি, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান এবং উত্তরপ্রদেশ জুড়ে ১৭টি জায়গায় তল্লাশি চালায়। সেই সময় ছয় জনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং আট জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অভিযোগ ছিল, তারা সকলেই আল-কায়েদা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দেশবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিল।

    তদন্তকারী সংস্থার মতে, এবার যে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের পরিকল্পনা আরও সুপরিকল্পিত ছিল। ধৃতদের বিদেশি যোগাযোগ, আর্থিক লেনদেন ও প্রযুক্তিগত সহায়তার উৎস খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া, তাদের ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ও ফোন ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ মনে করছে, ধৃতরা একটি বড় নাশকতার ছক কষছিল, যা সফল হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হত। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দেশের অভ্যন্তরে যেকোনও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ রুখতে গোয়েন্দা সংস্থা ও বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছে। আগামী দিনে আরও তথ্য সামনে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
  • Link to this news (আজকাল)