মহিলার মাথায় প্রেসার কুকারের ঘা, গলা কেটে সব লুটে নিয়ে বাথরুমে গিয়ে যা করল গৃহকর্মী! ভয়ে কাঁপছেন স্থানীয়রা
আজকাল | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্বামী-ছেলে অন্যান্য দিনের মতোই ব্যবসার কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলেন নির্দিষ্ট সময়ে। বিকেলে আর মহিলাকে ফোনে পাননি। বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর, বাড়িতে ফিরে মহিলার স্বামী দেখেন, ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে দেহ। হায়দরাবাদের ঘটনায় আতঙ্কে কাঁপছেন স্থানীয়রা।
ঠিক কী হয়েছে? জানা গিয়েছে মৃত ওই মহিলার নাম রেনু আগরওয়াল। বয়স ৫০। সান লেক অ্যাপার্টমেন্টের ১৩ তলায় স্বামী-সন্তানের সঙ্গে থাকতেন তিনি। বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ স্বামী-সন্তান কাজের জন্য বেরিয়ে গিয়েছিলেন। ফ্ল্যাটে ছিলেন তিনি একা। বিকেল পাঁচটা নাগাদ স্ত্রীকে বারবার ফোন করেও পাননি স্বামী। তাঁদের পারিবারিক স্টিলের ব্যবসা রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয় বুঝতে পেরে, তড়িঘড়ি ফিরে আসেন তাঁরা ফ্ল্যাটে। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় কোনও রকমে ব্যালকনি দিয়ে দরজা খোলার চেষ্টা করা হয়। ভিতরে ঢুকে তাঁরা দেখেন ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে রেনু আগরওয়ালের দেহ।
তৎক্ষণাৎ খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর জানিয়েছে, হামলাকারীরা রেনু আগরওয়ালের হাত-পা বেঁধে প্রেসার কুকার দিয়ে মাথায় আঘাত করে। ছুরি ও কাঁচি দিয়ে তার গলা কাটা হয় মৃত্যু নিশ্চিত করতে। তদন্তে জানা গিয়েছে, আগরওয়ালদের বাড়ি থেকে লুট হয়েছে বিপুল টাকার দ্রব্যাদি। তালিকায় ৪০ গ্রাম সোনা এবং নগদ ১ লক্ষ টাকাও রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এখানেই শেষ নয় ঘটনার। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, কেবল লুট এবং গৃহকর্ত্রীকে খুন নয়, গোটা ঘটনা ঘটানোর পর তারা এরপর তারা বাথরুমে গিয়ে স্নান করে, রক্তমাখা পোশাক অপরাধস্থলে ফেলে রেখে অন্য পোশাক পরে সেখান থেকে চম্পট দেয়। পুলিশ রেনুর দেহ উদ্ধার করে, দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
কারা ঘটাল এই ঘটনা? কেনই বা? প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ এই ঘটনায় দু' জনকে আটক করেছে। জানা গিয়েছে ওই দুই সন্দেহভাজনের মধ্যে একজন আগরওয়ালদের বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত। আর একজন পাশের বাড়িতে কর্মরত ছিল। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজে দেখতে পায়, দু' জনেই এক নির্দিষ্ট সময়ে ১৩ তলায় যায় এবং ঠিক পাঁচটা বেজে দু' মিনিটে ওই ফ্ল্যাট তেকে বেরিয়ে যায়। দু' জনেই ঘটনার পর রাঁচিতে পালিয়ে যাচ্ছিলেন বলেও জানা গিয়েছে।
তথ্য, আগরওয়ালের বাড়িতে কর্মরত হর্ষ ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা এবং প্রায় ১০ দিন আগে কলকাতার একটি সংস্থার মাধ্যমে তাকে কাজে নিযুক্ত করা হয়েছিল। রৌশন ১৪ তলায় তাদের প্রতিবেশীর বাড়িতে কাজ করত। রৌশনের নিয়োগকর্তার মালিকানাধীন একটি দু' চাকার গাড়িতে করে পালিয়ে যেতে দেখা যায় দু' জনকে। সিসিটিভি ফুটেজে তা দেখার পরেই পুলিশ ওই দুই ব্যক্তিকে আটক করে।
রেনু আগরওয়াল মৃত্যুর ঘটনায় কুকাটপল্লি থানায় একটি খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে, পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ, ফরেনসিক প্রমাণ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য সংগ্রহ করছে বলে জানা গিয়েছে প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত।