সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ভোটার তালিকা সংশোধনে অবশেষে এই নথিতে রাজি নির্বাচন কমিশন...
আজকাল | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহারের বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (Special Intensive Revision - SIR) প্রক্রিয়ায় আধার কার্ডকে প্রমাণপত্র হিসেবে গ্রহণ করতে বাধ্য হল নির্বাচন কমিশন (ECI)। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, আধার কার্ডকে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত বা বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিচয়পত্র হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সুর্যকান্ত এবং জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ আজকের শুনানিতে জানিয়েছেনা, “আধার কার্ড নাগরিকত্ব প্রমাণের দলিল নয়, তবে এটি পরিচয়পত্র হিসেবে গৃহীত হবে। কমিশনের তৃণমূল স্তরের কর্মীদের এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিতে হবে।”
অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস (ADR) ও স্বরাজ পার্টির নেতা তথা সমাজকর্মী যোগেন্দ্র যাদব আর্টিকেল ৩২-এর অধীনে এই সংশোধনী প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। তাদের অভিযোগ, কমিশনের পদক্ষেপ ‘ইচ্ছাকৃত, অসাংবিধানিক এবং অস্বচ্ছ’। গত ১ আগস্ট প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় ৬৫ লক্ষ নাম বাদ পড়ে, অথচ বাদ দেওয়া ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করেনি কমিশন। এর প্রতিবাদে আবেদনকারীরা আদালতের দ্বারস্থ হন। পরে ১৪ আগস্ট শীর্ষ আদালত কমিশনকে নির্দেশ দেয়, বাদ পড়া ভোটারদের নাম ও কারণ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে এবং দাবি-আপত্তি গ্রহণের সময়সীমায় আধার কার্ড মেনে নিতে হবে।
প্রথমে কমিশন ১১টি পরিচয়পত্র গ্রহণ করলেও আধারকে বাদ দেয়। এর ফলে ভোটাররা চরম বিভ্রান্তিতে পড়েন। যদিও বিহারে আধার কভারেজ প্রায় ৯৪%, তবুও কমিশনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। এক সর্ব ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আধার নিয়ে কমিশনের দ্বিধা এবং অবস্থান পরিবর্তন পুরো প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে। আজ আদালতে কমিশন জানিয়েছে, আধারকে ১২তম প্রমাণপত্র হিসেবে ধরা হবে। তবে কমিশনের কর্মীরা আধারের যাচাই-বাছাই করার ক্ষমতা রাখবেন। একই সঙ্গে আদালত স্পষ্ট করে দেয়, আধার কোনোভাবেই নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়।
ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য দাবি-আপত্তি জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫। আজকের শুনানিতে কমিশন জানায়, আপত্তি জমা দেওয়া আগের মতোই গ্রহণ করা হবে। তবে আবেদনকারীরা সময়সীমা বাড়ানোরও দাবি তুলেছেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনে আধার কার্ড গ্রহণের বাধ্যবাধকতা তৈরি হওয়ায় প্রায় কোটি কোটি ভোটার স্বস্তি পেলেও, আধারের বৈধতা ও নাগরিকত্বের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক আবারও সামনে এল।