• আরও চওড়া দরজা, আরও বেশি সুবিধা! যাত্রী সুবিধার্থে মেট্রোর নতুন রেক এল কলকাতায় ...
    আজকাল | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: শহর জুড়েছে মেট্রোয়। নিত্যযাত্রীদের বহু ক্ষেত্রেই আর রোদ মাথায় নিয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। ফেরার সময় জ্যামের ভাবনাও ভাবতে হচ্ছে না। মেট্রোতে ভিড় নিয়ে যদিও অনেকেই অনুযোগ করছেন, তবে পুজোর আগে একযোগে তিন লাইন সম্প্রসারণে সুবিধা হয়েছে বিস্তর। মেট্রোযাত্রীদের জন্য আরও সুখবর পুজোর মুখেই। 

    মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর জাহাজে করে দুটি নতুন ডালিয়ান রেক এসে পৌঁছেছে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরে। এই রেকগুলি বিশ্বব্যাপী দরপত্রের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছে। মোট ১৬টি কোচ জাহাজ থেকে নামানোর প্রক্রিয়া চলছে। তার পরেই সেগুলি নিয়ে আসা হবে নোয়াপাড়া কারশেডে। 

    জানা গিয়েছে নয়া রেক-এ বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা রয়েছে। এই রেকগুলিতে অন্যান্য চলমান এসি রেকের তুলনায় ১৯০ মিমি চওড়া দরজা রয়েছে। তাছাড়া, যাত্রীদের আরামের জন্য বসার ব্যবস্থা, উন্নত এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম, শব্দ কমানোর বৈশিষ্ট্য এবং চোখ ধাঁধানো আলোকসজ্জার মতো কিছু সংযোজন রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে মেট্রোর তরফে। এর আগেও, দু' দফায় জাহাজে করে ৩২টি কামরা এসেছে শহরে।  এই দফায় আরও ১৬টি কামরা এল। মোট তিন দফায় ৪৮টি কামরা এল সাম্প্রতিক সময়ে। সূত্রের খবর, বন্দর থেকে শিয়ালদহ বজবজ শাখার রেললাইন ব্যবহার করে রেক দুটিকে পৌঁছনো হবে নোয়াপাড়া কারশেডে।

    জানা গিয়েছে, এই নয়া রেকগুলি চিনের ডালিয়ান বন্দর থেকে আনা হয়েছে কলকাতায় জলপথে। এই ডালিয়ান রেকের ব্যবহারের পরিকল্পনা বহুদিনের। ২০২৩ থেকে শুরু হয়েছিল এই রেকের বাণিজ্যিক যাত্রা। 

    প্রসঙ্গত, ২২ আগস্ট যশোর রোড মেট্রো স্টেশনে সবুজ পতাকা উড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কলকাতা মেট্রোর বিস্তারের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিলেন। একসঙ্গে তিনটি নতুন করিডরের উদ্বোধনের ফলে মেট্রোর দৈর্ঘ্য এক লাফে বেড়ে গিয়েছে ১৪ কিলোমিটার। এর মধ্যে গ্রিন লাইন চালু হয়ে যায় ২২ আগস্ট থেকে। আর ইয়েলো ও অরেঞ্জ লাইনে যাত্রী পরিবহন শুরু হয় গত ২৫ আগস্ট থেকে। 

    তবে সাম্প্রতিককালে, মেট্রোয় কিন্তু মাঝে মাঝেই পরিষেবা বিঘ্নিত হতে দেখা যাচ্ছে। কখনও টানেলে জল দাঁড়িয়ে যাচ্ছে তো কখনও যান্ত্রিক ত্রুটি। এমনকী নির্ধারিত সময়ের অনেক পড়ে পড়ে মিলছে পরিষেবা। যা নিয়ে ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছে যাত্রীদের মধ্যে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা নাগাদ যাত্রীরা অভিযোগ করতে থাকেন, প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে কোনও পরিষেবাই মেলেনি না টালিগঞ্জ থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশন পর্যন্ত। মেট্রো স্টেশনে প্রবল ভিড়। যাত্রী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। টানা কয়েকদিন কলকাতা মেট্রোয় দুর্ভোগ বেশ চোখে পড়ার মতো। 

    মেট্রো রেলের বিন্যাস শহর কলকাতা তথা রাজ্যবাসীর যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য এক ঐতিহাসিক ব্যবস্থা। কলকাতা মেট্রোর সম্প্রসারণের পর এমনটাই দাবি করেছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। বহু প্রতীক্ষার পর সম্প্রতি কলকাতা মেট্রো সরাসরি হাওড়া থেকে সেক্টর ফাইভ, বিমানবন্দর এবং বেলেঘাটা পর্যন্ত ট্রেন চালু করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয়, কলকাতা মেট্রোকে একই সূত্রে বাধার পর মানুষের আবেগ ছিল যথেষ্ট পরিমাণ, কিন্তু মেট্রো রেলের পরিকাঠামো সেই পরিমাণ ছিল কি? সম্প্রতি, ব্লু লাইনে নিত্যযাত্রীদের পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থায় পরিণত হয়েছে। একাধিক স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম থেকে মেট্রো ছাড়তে পারছে না। শিয়ালদা কিংবা এসপ্ল্যানেড কিংবা হাওড়া স্টেশনে ভিড় অত্যাধিক হয়ে উঠছে অফিস টাইমে। ঠাসাঠাসি ভিড়ে গেট বন্ধ করাও দায় হয়ে উঠেছে। ফলে নাগরিক পরিষেবা যেমন হচ্ছে ক্ষুন্ন তেমনি সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে দিনে দিনে। যে পরিমাণ নিত্যযাত্রী সেই তুলনায় মেট্রোরেলের পরিষেবা এবং পরিকাঠামো কোনওটাই এখনও সঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারেনি মেট্রোরেল। এর ফলে প্রায়শই এই ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের।

    এই পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে অর্থাৎ নিত্যযাত্রীদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা জানান, ট্রেনে চাপলে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি। কখনও কখনও অসুস্থ পর্যন্ত হয়ে পড়ছেন বয়স্ক মানুষরা। আর শিশু হলে তো কথাই নেই। মেট্রোর দরজা বন্ধ হয়ে যাবার পর ভয়ানক ভাবে হাঁসফাঁস অবস্থা তৈরি হচ্ছে এবং অক্সিজেনের ঘাটতি পর্যন্ত ঘটছে বলে দাবি করছেন নিত্যযাত্রীরা। তার মাঝেই শহরে এল নয়া রেক। 
  • Link to this news (আজকাল)