আলিপুরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই বাঘিনীর মৃত্যু, কী হয়েছিল?
আজকাল | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: আলিপুর চিড়িয়াখানায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মারা গেল দুটি বাঘিনী। মঙ্গলবার মারা গিয়েছিল পায়েল নামে একটি বাঘিনী। তার ঠিক পরের দিনই আরও এক বাঘিনী রূপাও মারা যায়। ২৪ ঘন্টার মধ্যে দুই বাঘিনীর মৃত্যু ঘিরে তৈরি হয়েছে রহস্য। যদিও চিড়িয়াখানা সূত্রে খবর, বার্ধক্যজনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে দুই বাঘিনীর।
এদিকে, সূত্রের খবর আলিপুরে জোড়া বাঘিনীর মৃত্যুর তদন্ত করতে সিডব্লুইউএলডব্লুউ নির্দেশে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে বাঘিনীদের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। ভিসেরা পরীক্ষাও করা হবে বলে সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, সাদা বাঘিনী রূপার জন্ম আলিপুরেই। সাদা বাঘ অনির্বাণ ও হলুদ কালো ডোরাকাটা বাঘিনী কৃষ্ণার মেয়ে ছিল। বয়স প্রায় ২১ বছর হয়েছিল। বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিল সে। তার একটি পা নাকি প্যারালাইজড হয়ে গিয়েছিল। হাঁটাচলার করার ক্ষমতাও নাকি রূপা হারিয়ে ফেলেছিল বলে খবর। অন্যদিকে, পায়েলকে ২০১৬ সালে ওড়িশার নন্দনকানন থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল আলিপুরে। তার বয়স হয়েছিল ১৭ বছর। বৃদ্ধ বাঘিনী বহুদিন ধরে অসুস্থ ছিল। খাওয়াদাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছিল বলে সূত্রের খবর। মাস তিনেক আগে তার ইউএসজিও করা হয়। সেই সময় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দিয়ে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। চিকিৎসায় সাড়া দিয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে মারা যায় পায়েল। আর বুধবার মারা যায় রূপা।
এদিকে, জানা গেছে, এই ঘটনায় ৩ জন পশু চিকিৎসককে নিয়ে একটি টিম বানানো হয়েছে যারা এই ময়নাতদন্ত করবেন। পুরো প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি করা হবে বলে সূত্রের খবর। এই ঘটনা চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ এবং বন্যপ্রাণী প্রেমীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বাঘিনী দুটির পরিচর্যা এবং স্বাস্থ্যের বিষয়ে কোনও গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতেই তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। ময়নাতদন্তের ফলাফল হাতে এলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কাছে এই ঘটনা একটি বড় ধাক্কা। তারা এখন ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে। ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, সে জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এদিকে, সুন্দরবনে ফের বাঘের মুখে মৎস্যজীবী। চামটার জঙ্গলের ধার থেকে এবার এক মৎস্যজীবীকে জঙ্গলে টেনে নিয়ে গেল বাঘ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে নিখোঁজ ওই মৎস্যজীবী চিরঞ্জিত মণ্ডলের বাড়ি গোসাবার কালিদাসপুরে। এবিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার মুখ্য বন আধিকারিক নিশা গোস্বামী বলেন, ‘নিখোঁজ ওই মৎস্যজীবীর খোঁজে জঙ্গলে তল্লাশি চালাচ্ছেন বনকর্মীরা।’
চলতি সপ্তাহের সোমবার বিকেলে এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩১ আগস্ট গোসাবা ব্লকের সুন্দরবন কোস্টাল থানা এলাকার কালিদাসপুরের বাসিন্দা চিরঞ্জিত মণ্ডল–সহ তিনজন মৎস্যজীবী সুন্দরবনের নদীতে মাছ ধরতে যান। সোমবার বিকেলে চামটার জঙ্গলের কাছে তাঁরা মাছ ধরছিলেন। নৌকা পাড়ের কাছাকাছিই ছিল। সেইসময় হঠাৎ করে একটি বাঘ জঙ্গল থেকে ছুটে এসে মৎস্যজীবীদের নৌকায় ঝাঁপ দেয়। বাঘটি এরপর সোজাসুজি চিরঞ্জিতের ঘাড়ে কামড় বসিয়ে একটানে নৌকা থেকে টান দিয়ে নিচে নামিয়ে নেয় এবং মুখে করে সোজা জঙ্গলে ঢুকে যায়।