• পুজোর পরেই বাংলা সহ গোটা দেশে এসআইআর
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • পুজোর পরেই এবার দেশজুড়েই ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) চালু করতে চলেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। নির্দেশ জারি করে বলা হয়েছে, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করতে হবে রাজ্যগুলিকে। অক্টোবরে বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরই শুরু হতে পারে এই প্রক্রিয়া। তবে বাংলায় এই প্রক্রিয়া শুরু হলে রাজনৈতিক তরজা আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছে রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহল।

    বুধবার দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সমস্ত পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখতে হবে। যদিও এখনও নিশ্চিত নয়, সব রাজ্যে একযোগে সংশোধন শুরু হবে, নাকি যেখানে আগামী বছর বিধানসভা ভোট আগে সেই রাজ্যগুলিতে শুরু হবে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, অসম, কেরল ও পুদুচেরিতে সামনের বছরেই বিধানসভা নির্বাচন। ফলে এই রাজ্যগুলিতে এসআইআর আগে চালু হওয়ার সম্ভাবনা প্রকাশ করছেন অনেকে।

    বাংলার রাজনীতিতে বিষয়টি ইতিমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে। উত্তরবঙ্গ সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোলাখুলি জানিয়ে দিয়েছেন তাঁর আপত্তির কথা। তাঁর বক্তব্য, ‘এসআইআর কোনও ২-৩ মাসের কাজ নয়, করতে গেলে অন্তত ২-৩ বছর সময় লাগে।’ পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন বিজেপির হয়ে কাজ করছে।’ তৃণমূল শিবিরও মনে করছে, বিজেপি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসআইআর চাপিয়ে দিতে চাইছে।

    তবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, বাংলায় প্রক্রিয়া চালুর জন্য পরিকাঠামো ও কর্মী বাহিনী প্রস্তুত। জাতীয় কমিশনকে সে কথা ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে।

    বিহারে সম্প্রতি হওয়া এসআইআর-এর অভিজ্ঞতাও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। অভিযোগ উঠেছিল, অন্তত ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ পড়েছে। বিরোধীরা সরাসরি কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। কমিশনের দাবি, এবার প্রযুক্তিনির্ভর একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাতে প্রকৃত ভোটারদের নাম বাদ না যায়। এক কর্তার কথায়, ‘২০০২ সালে বাংলায় প্রায় ২৮ লক্ষ নাম বাদ গিয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই এবার আরও স্বচ্ছ ও আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে।’

    রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পুজোর পর যদি বাংলায় এসআইআর শুরু হয়, তবে বিরোধিতা এবং সংঘাত দুই-ই তুঙ্গে উঠবে। এখন কমিশন এ বিষয়ে তার সিদ্ধান্তে অনড় থাকবে, নাকি রাজনৈতিক চাপের মুখে গতি বদলাবে? এখন সেদিকেই তাকিয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)