আজকাল ওয়েবডেস্ক: বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মানুষই নিজের স্বাচ্ছন্দ্যকে প্রাধান্য দেয়। তারা এটি প্রায়ই অন্যদের অসুবিধার বিনিময়ে করে থাকে। এর একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। একটি ভিডিও ভাইরাল হয় যেখানে দেখা যায় এক তরুণী ট্রেনের এমারজেন্সি ব্রেক চেন টেনে নামার চেষ্টা করছেন। এই কাজটি শুধু ঘটনাস্থলে অপ্রয়োজনীয় আতঙ্কের সৃষ্টি করেনি, বরং উপস্থিত সহ যাত্রীদের চরম ভোগান্তি ও ট্রেনের বিলম্বও ঘটিয়েছে।
ভারতের রেলওয়ে আইন, ১৯৮৯-এর ১৪১ নম্বর ধারা অনুযায়ী, বৈধ কারণ ছাড়া ট্রেনের এমারজেন্সি চেন টানা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই অপরাধের জন্য জরিমানা, কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডই হতে পারে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায় এটি ভারতের রেলওয়ের একটি ভিড়ভাট্টা সাধারণ কামরার ভেতরের দৃশ্য। ভিডিওতে দেখা যায়, এক তরুণী সিটের ওপর দাঁড়িয়ে ট্রেনের ব্রেক চেন টানছেন। ট্রেনটি তখন তাঁর গন্তব্যের কাছাকাছি পৌঁছেছে। চেন টানার ফলে ট্রেন ধীরে ধীরে থেমে যায়, এবং তিনি শান্তভাবে গেটের দিকে এগিয়ে যান ট্রেন থেকে নামার জন্য। তাঁর আচরণে যাত্রীদের প্রতি কোনও উদ্বেগ বা অনুশোচনার চিহ্ন ছিল না।
এই ঘটনা দর্শকদের মধ্যে প্রবল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। অনেকে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানান। একজন ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, 'আশা করি ওর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।' আরেকজন লেখেন, 'ওকে কি গ্রেপ্তার করা হয়েছে বা জরিমানা করা হয়েছে??' কেউ কেউ সরাসরি বলেন, 'অবিলম্বে গ্রেপ্তার করো।'
একজন মন্তব্য করে বলেন, 'ভারতে প্রতিদিন এমনই হয়।' আরেকজন লেখেন, 'মনে হচ্ছে আশেপাশে শুধু ছেলেরা ছিল, হয়তো এটাই কারণ।' আরও একজন লেখেন, 'দিন দিন নাগরিক বোধ কমছে।'
কেউ কেউ সম্ভাব্য যৌন হেনস্থার প্রসঙ্গ টানেন। একজন লেখেন, 'হয়তো ও নিজেকে অনিরাপদ মনে করেছিল আশেপাশের পুরুষদের জন্য।' আরেকজন প্রশ্ন তোলেন, 'লোকজন ভিডিও করছে, কেউ তাঁকে থামাতে গেল না কেন?' কেউ কেউ বলেন, 'তাঁকে দোষ দেওয়ার আগে বুঝে নাও, হয়তো সে হয়রানির শিকার হচ্ছিল।' অন্য একজন লেখেন, 'ঘটনার পরে তাঁর হাসি খুবই সন্দেহজনক।'
কারও মন্তব্য ছিল, 'ভাল করেছেন তিনি। ওঁর চারপাশে কেবল ছেলেরাই তো ছিল।' কেউ আবার ব্যঙ্গ করে লেখেন, 'ওঁর স্টেশন বলে ট্রেন থামাতে হবে, বুঝেছো! স্টেশনের মালকিন সে!!'
প্রসঙ্গত এর আগে, আরেকটি ঘটনায় দেখা যায়, একজন ব্যক্তি রাজধানি এক্সপ্রেস ট্রেনের ব্রেক টেনে দেন যাতে তাঁর বন্ধু ট্রেন থেকে নেমে যেতে পারেন। খবর অনুযায়ী সেই ঘটনাতেও রেল কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে।
এইসব ঘটনাগুলো আমাদের মনে নানা প্রশ্ন জাগায়। এহেন আইন ভেঙে ব্যক্তিগত সুবিধা নেওয়া যেমন অনৈতিক, তেমনই এতে অনেক নিরীহ মানুষের নিরাপত্তা ও যাত্রার ভোগান্তি হয়। আইন মানা এবং অন্যদের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করা আমাদের সকলের কর্তব্য।