রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ! খাড়গেকে চিঠি দিল সিআরপিএফ
আজকাল | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিদেশ সফরের সময় নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে। অভিযোগের উল্লেখ করে তাই সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) তরফে চিঠি দেওয়া হল কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকে।
গত বুধবার কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গেকেও লেখা তাঁর চিঠিতে, সিআরপিএফ ভিভিআইপি নিরাপত্তা প্রধান সুনীল জুন অভিযোগ করেছেন যে, রায়বেরেলির সাংসদ রাহুল গান্ধী তাঁর নিরাপত্তা বলয়কে "গুরুত্ব সহকারে" নিচ্ছেন না। কারণ তিনি বেশিরভাগ সময় "কাউকে না জানিয়ে" বিদেশ ভ্রমণ করছেন।
চিঠিতে নিয়ম লঙ্ঘনের ফর্দ পাঠানো হয়েছে। সিআরপিএফ-এর এই শীর্ষ কর্তা রাহুল গান্ধীর ইটালি (৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে ৯ জানুয়ারি ২০২৫), ভিয়েতনাম (১২ থেকে ১৭ মার্চ ২০২৫), দুবাই (১৭ থেকে ২৩ এপ্রিল ২০২৫), কাতার (১১ থেকে ১৮ জুন ২০২৫), লন্ডন (২৫ জুন থেকে ৬ জুলাই ২০২৫) এবং মালয়েশিয়া (৪ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫)-এর মতো দেশগুলিতে বিদেশ সফরের কথা উল্লেখ করেছেন। রায়বেরেলির সাংসদ সিআরপিএফ-এর নিয়ম অনুসারে উল্লিখিত বিধি লঙ্ঘন করছেন বলে চিঠিতে লেখা হয়েছে।
সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ) পৃথক আরেকটি চিঠি দিয়েছে খোদ রাহুল গান্ধীকে। তারা জানিয়েছে, তিনি যেভাবে বিধি লঙ্ঘন করছেন, তাতে তাঁর নিরাপত্তা বিপদের মুখে পড়তে পারে। সরকারি কর্তারা সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, রাহুলের নিরাপত্তাবিধি ভঙ্গ রীতিমতো উদ্বেগের বিষয়। ভবিষ্যতে তিনি যেন নিয়ম মেনে চলাফেরা করেন।
তবে এই চিঠি প্রসঙ্গে রাহুল গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খাড়গে বা কংগ্রেস দল, এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বর্তমানে অ্যাডভান্সড সিকিউরিটি লিয়াজোঁ (এএসএল)-সহ জেড প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা ভোগ করছেন। জেড প্লাস এএসএল হল প্রাণনাশের ঝুঁকি রয়েছে এমন সব ব্যক্তিদের জন্য সর্বোচ্চ স্তরের সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে একটি। এই পর্যায়ের সুরক্ষায় ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড কমান্ডো-সহ প্রায় ৫৫ জন নিরাপত্তা কর্মী রয়েছে।
এএসএল-এর অধীনে, নিরাপত্তা কর্মীরা স্থানীয় পুলিশ এবং গোয়েন্দা ইউনিটের সঙ্গে সমন্বয় করে ভিআইপিদের পরিদর্শনের জন্য স্থানের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ পরিচালনা করে।
এ ধরণের চিঠি এই প্রথমবার নয়। ২০২২ সালে, সিআরপিএফ দাবি করে- ২০২০ সাল থেকে ১১৩ বার নিরাপত্তা নির্দেশিকা লঙ্ঘন করেছেন রাহুল গান্ধী। এই পরিসংখ্যানের মধ্যে কংগ্রেসের ভারত জোড়ো যাত্রার দিল্লি পর্বও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
২০২৩ সালে, কংগ্রেসের ভারত জোড়ো যাত্রার কাশ্মীর পর্বে রাহুল গান্ধী উপত্যকায় প্রবেশ করার সময় বিশাল অপ্রত্যাশিত জনতা তাঁকে স্বাগত জানায়। হাইপ্রেফাইল এই নেতা ভিড়ের মাঝখানে আটকে ছিলেন এবং প্রায় ৩০ মিনিটের জন্য নড়াচড়া করতে পারেননি বলে অভিযোগ ছিল তাঁর দলের সহকর্মীদের। সেই সময়ই নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটির অভিযোগ করেছিলেন খোদ রাহুল গান্ধী।
কয়েকদিন আগেই কংগ্রেস, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেছিল যে- ২৪ ডিসেম্বর ভারত জোড়ো যাত্রা জাতীয় রাজধানীতে প্রবেশের সময় "নিরাপত্তা লঙ্ঘন" হয়েছে।
গত মাসে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায়, রাহুল গান্ধী একটি মোটর বাইকে চড়ে বিহারে 'ভোটার অধিকার যাত্রা'-তে অংশ নিচ্ছিলেন, তখন এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি হঠাৎ তাঁকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তাঁর কাঁধে চুমু খায়। কংগ্রেস নেতা তখন তাঁর বাইকের ভারসাম্য বজায় রাখতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। সেই সময়ে নিরাপত্তা কর্মীরা ওই ব্যক্তির উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন, তাঁকে চড় মেরে ধাক্কা দিয়ে একপাশে সরিয়ে দেওয়া হয়।
২০১৯ সালে, কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় তিন দশক পর কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং তাঁর সন্তান রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢ়ড়াকে দেওয়া স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসপিজি) সুরক্ষা প্রত্যাহার করে নেয়। বদলে তাঁদের সুরক্ষার বিষয়টি সিআরপিএফ-কে দেওয়া হয়।