৬৫ বছরেও মরণপণলড়াই, ১৮ বার কামড় খেয়ে বন্য শিয়ালকে আচঁল দিয়ে পেঁচিয়ে মারলেন এক বৃদ্ধা...
আজকাল | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: মধ্যপ্রদেশে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। শিবপুরি জেলায় এই বিস্ময়কর ঘটনাটি ঘটে। খবর অনুযায়ী বারখেদি গ্রামের ৬৫ বছর বয়সী এক প্রৌঢ়া নিজের চূড়ান্ত সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। জানা গিয়েছে তিনি একটি শিয়ালের আক্রমণ প্রতিহত করে নিজের প্রাণ রক্ষা করেছেন। সোমবার সন্ধ্যায় নিজের খেতে ঘাস কাটতে গিয়ে তিনি হঠাৎ এক শিয়ালের আক্রমণের শিকার হন। দীর্ঘ প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলতে থাকে এই লড়াই। অবশেষে নিজের শাড়ির একটি টুকরো দিয়ে শিয়ালটিকে গলা টিপে হত্যা করেন তিনি।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রৌঢ়ার নাম সুরজিয়া বাই জাতভ। তিনি একজন বিধবা ও ছোট কৃষিজীবী। খবর অনুযায়ী, সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে তিনি ঘাস কাটতে মাঠে যান। এরপর একটি ঘাসের গাদা তুলতে নিচু হলেই আচমকা একটি শিয়াল এসে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শিয়ালটি তাঁর পা ও হাতে বারবার কামড়াতে থাকে।
এহেন হিংস্র ঘটনার জেরে সুরজিয়া বাই বলেন, 'সেই মুহূর্তে মনে হচ্ছিল আমি বোধহয় আর বাঁচব না।' প্রৌঢ়া রক্তাক্ত ও দুর্বল অবস্থায় একা লড়ছিলেন। একা থাকলেও তিনি সাহস হারাননি। তিনি প্রায় ২০ মিনিট ধরে দুই হাতে শিয়ালের চোয়াল চেপে ধরে লড়াই চালিয়ে যান।
এরপর চূড়ান্ত পরিশ্রান্ত ও আহত অবস্থায় তিনি নিজের শাড়ির একটি অংশ ছিঁড়ে একটি ফাঁস তৈরি করেন এবং সেটি শিয়ালের গলায় জড়িয়ে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে টানতে থাকেন যতক্ষণ না শিয়ালটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এরপর তিনি অচেতন হয়ে পড়ে যান।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত গভীর হলেও তিনি বাড়ি না ফেরায় গ্রামের লোকজন তাঁর খোঁজ করা শুরু করেন। কয়েক ঘণ্টা খোঁজার পর তাঁরা তাঁকে মাঠে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। প্রথমে তাঁকে বাদরবাস স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেওয়া হয় এবং পরে শিবপুরি জেলা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
ঘটনার জেরে পরিবারের সদস্যরা জানান, মধ্যরাতে তিনি জ্ঞান ফিরে পান। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর শরীরে ১৮ টি গভীর ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। তবে সৌভাগ্যবশত মাথা, গলা ও পেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে আঘাত লাগেনি, যার ফলে তাঁর প্রাণ এ যাত্রায় বেঁচে যায়।
সুরজিয়া বাইয়ের এই সাহসিকতা গোটা এলাকাজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এই বয়সে এমন সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে তিনি হয়ে উঠেছেন স্থানীয়দের কাছে এক অনন্য উদাহরণ।