• বাড়ির ভিতরে ঢুকতেই ফোঁস! আট ফুট লম্বা ওটা কী? আতঙ্ক ছড়াল এলাকায় ...
    আজকাল | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ওড়িশার খোর্ধা জেলায় এক বিশাল আট ফুট লম্বা বিরল সাদা কোবরা সাপ উদ্ধার হল। ভুবনেশ্বরের উপকণ্ঠের এক গ্রামের একটি বাড়ির উঠোনে সাপটিকে দেখা গিয়েছে বলে খবর স্থানীয় সূত্রে। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোরে বাড়ির লোকজন প্রথমে সাপটিকে দেখতে পান এবং সঙ্গে সঙ্গেই চিৎকার করে প্রতিবেশীদের ডাকেন। খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশেপাশের মানুষ ভিড় জমায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাড়ির ভেতরেই একটি ব্যাঙ ধরে খেয়ে ফেলে ওই সাদা কোবরাটি। এরপর সাপ ধরার হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরবর্তীকালে সাপটিকে নিরাপদে ধরে চন্দক বনাঞ্চলে ছেড়ে দেওয়া হয়ে বলে জানা গিয়েছে। শুধু ওড়িশাতেই নয়, রাজধানী দিল্লি ও আশপাশের এলাকাতেও বেড়েছে সাপের দৌরাত্ম্য।

    কিছুদিন আগে দক্ষিণ দিল্লির ইস্ট অব কৈলাশের এক আবাসনের তৃতীয় তলার রান্নাঘরে খুঁজে পাওয়া যায় প্রায় তিন ফুট লম্বা একটি সাপ, যা মসৃণ হলুদ গায়ের উপর কালো দাগযুক্ত। জানা গেছে, এটি ছিল এক প্রজাতির ভারতীয় র‍্যাট স্নেক, যা বিষহীন হলেও ঘটনার জেরে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ইস্ট অব কৈলাশ আবাসক সমিতির সভাপতি করণ আগরওয়াল জানান, “রান্নাঘরের ক্যাবিনেটেই সাপটি ছিল, আর খবর পেয়েই আমরা সঙ্গে সঙ্গে ওয়াইল্ডলাইফ এসওএসকে ফোন করি।” পরিবেশ সংরক্ষণে নিযুক্ত এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তৎপরতা প্রশংসনীয়—তাদের র‍্যাপিড রেসপন্স ইউনিট এসে সাপটিকে সাবধানে উদ্ধার করে। তবে ঘটনা এখানেই শেষ নয়।

    ওয়াইল্ডলাইফ এসওএস-এর তথ্যানুযায়ী, গত কয়েক সপ্তাহে দিল্লি ও এনসিআর-এ একাধিক সাপ উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন থেকে গ্যাস সিলিন্ডারের পাশে কুণ্ডলী পাকানো চার ফুট লম্বা একটি স্পেকটাকল্ড কোবরা উদ্ধার হয়েছে। এমনকি জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবন থেকেও উদ্ধার হয় একটি র‍্যাট স্নেক! গ্রেটার নয়ডায় একটি আলমারির ভিতর থেকে কোবরা, গাজিয়াবাদের একটি ক্রিকেট প্র্যাকটিস নেট থেকে সাত ফুট লম্বা র‍্যাট স্নেক, এমনকি বুরারি, পশ্চিম বিহার ও ছত্তরপুর থেকেও একাধিক উদ্ধার হয়েছে। একইসঙ্গে, আগ্রা শহরে জুন থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রায় ১০০টিরও বেশি সাপ উদ্ধার হয়েছে।

    উদ্ধার হওয়া সাপের মধ্যে ছিল ৩৪টি র‍্যাট স্নেক, ২৩টি কোবরা এবং ২১টি ওল্ফ স্নেক। পরিবেশবিদরা বলছেন, বর্ষাকালে প্রাকৃতিক বাসস্থল জলমগ্ন হওয়ায় সাপেরা শুষ্ক আশ্রয় খোঁজে—তাই তারা ঢুকে পড়ে ঘরবাড়ি, স্কুল, গুদাম বা এমনকি সরকারি ভবনেও। অনেক সময় দেখা যায়, গাড়ির বনেট, রান্নাঘরের ক্যাবিনেট বা মুরগির খোঁয়াড়ের মধ্যেও সাপ ঢুকে পড়েছে। ওয়াইল্ডলাইফ এসওএস-এর প্রতিষ্ঠাতা কার্তিক সত্যনারায়ণ জানান, “ভয় পেয়ে প্রতিক্রিয়া জানানো নয়, বরং সচেতনতা এবং প্রশিক্ষিত দলের সাহায্য নেওয়াই এই পরিস্থিতিতে সঠিক পথ।” মানুষ এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি সচেতন হচ্ছে, যা পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী রক্ষার জন্য ইতিবাচক দিক।
  • Link to this news (আজকাল)