বিহার SIR-এ নাম বাদ, সবচেয়ে বেশি নোটিস গিয়েছে বাংলা ঘেঁষা ৩ জেলায়
প্রতিদিন | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: আন্তর্জাতিক হোক বা রাজ্যের সীমানা, গলার কাঁটা হয়ে দাড়াচ্ছে কমিশনের। বিহারে বিশেষ নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধন করার সময় এমনই অভিজ্ঞতা হয়েছে কমিশনের কর্তাদের। জানা গিয়েছে, বিহারে ভোটার তালিকা থেকে সবথেকে বেশি নাম বাদ গিয়েছে আন্তর্জাতিক সীমান্ত, উত্তরপ্রদেশ এবং বাংলার সীমানা লাগোয়া জেলাগুলি থেকে। এরমধ্যে রয়েছে গোপালগঞ্জ, পূর্ণিয়া, কিশানগঞ্জ, কাটিহার ও আরারিয়া। এই পাঁচটি রাজ্য নেপাল, বাংলা এবং উত্তর প্রদেশের সীমান্ত লাগোয়া এলাকা।
সূত্রের খবর, কেন এমন ঘটনা ঘটলো তা খতিয়ে দেখছে কমিশন। জানা গিয়েছে, এই বাদ যাওয়া নামের মধ্যে সংখ্যালঘুদের সংখ্যাই সবথেকে বেশি। গতবারের নির্বাচনে বিহারের ৩৮টি জেলায় মোট ভোটারের সংখ্যা ছিল ৭.৯ কোটি। ভোটার তালিকা সংশোধনের পর তা কমেছে ৬৫ লক্ষ। এর মধ্যে একক জেলা হিসেবে সবথেকে বেশি নাম বাদ গিয়েছে উত্তরপ্রদেশের সীমানা লাগোয়া গোপালগঞ্জ থেকে। এখান থেকে ১৫.১ শতাংশ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে ভোটার তালিকা থেকে। তালিকায় এর পরেই রয়েছে পূর্ণিয়া এবং কিশানগঞ্জ। বিহারের চারটি জেলা পশ্চিমবঙ্গ এবং নেপালের সীমান্তবর্তী। পূর্ণিয়া, কিশানগঞ্জ ছাড়াও সীমানা এলাকায় রয়েছে কাটিহার এবং আরারিয়া। পরিসংখ্যান বলছে, পূর্ণিয়া থেকে ১২.০৮ শতাংশ এবং কিশানগঞ্জ থেকে ১১.৮২ শতাংশ ভোটারের নাম বাদ পড়েছে। সীমানা এলাকার বাকি দুই জেলার মধ্যে কাটিহার থেকে ৮.২৭ শতাংশ এবং আরারিয়া থেকে ৭.৫৯ শতাংশ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ সীমানা লাগোয়া জেলাগুলির মধ্যে মিলিতভাবে সবথেকে বেশি নোটিস গিয়েছে বাংলা ঘেঁষা তিন জেলায়। বস্তুত, সীমান্ত অঞ্চলের জেলাগুলিতে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা বেশি।
২০১১ সালের জনগণনার তথ্য অনুযায়ী, কিশানগঞ্জে মুসলিম সম্প্রদায়ের বাস সবচেয়ে বেশি, ৬৭.৮৯ শতাংশ। এছাড়া, কাটিহারে ৪৪.৪৭ শতাংশ, আরারিয়ায় ৪২.৯৫ শতাংশ এবং পূর্ণিয়ায় ৩৮.৪৬ শতাংশ মুসলিম ভোটার রয়েছেন। সীমানা অঞ্চলের ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য কী কী কারণ দেখানো হয়েছে? পরিসংখ্যান বলছে, ৩৯.২৯ শতাংশ নাম বাদ পড়েছে ‘স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত’ হওয়ার জন্য। ৩৩.৫৭ শতাংশ মৃত ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। এছাড়া, ১৮.২৫ শতাংশ ভোটারের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। আগে থেকে নাম নথিভুক্ত থাকা এবং নকল বা অতিরিক্ত নামের জন্য আরও ৮.৮৯ শতাংশ নাম বাদ গিয়েছে। খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে বাদ যাওয়া ভোটারের হার বিহারের অন্যান্য অংশের তুলনায়, সীমানা অঞ্চলে বেশি। ‘অনুপস্থিত’ ভোটারের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি পূর্ণিয়া এবং কিশানগঞ্জে। সমগ্র বিহারেই বাদ পড়া ভোটারের তালিকায় পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের সংখ্যা বেশি। সীমান্ত অঞ্চলেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চার জেলা থেকে মোট ৫৬.৭১ শতাংশ মহিলা ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।