• দেশের বাড়িতে তুঙ্গে পুজো প্রস্তুতি! কোমর বেঁধে নেমেছেন অনুব্রত
    প্রতিদিন | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • দেব গোস্বামী, বোলপুর: রয়েছে রাজনৈতিক ব্যস্ততা। জেলায় দলের সংগঠনের গুরুদায়িত্ব তাঁর কাঁধে। প্রতিদিন কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে মিটিং। শোনেন সাধারণ মানুষের অভিযোগ-অনুযোগও। তার মাঝেই বাড়ির পুজোয় কোমর বেঁধে নেমেছেন অনুব্রত মণ্ডল। গ্রামে যেতে না পারলেও খোঁজ নিচ্ছেন ফোনে। বছর ফিরে ঘরে মা আসছেন বলে কথা। কোনও খামতি রাখছেন না তিনি। গোটা মণ্ডল পরিবার নাওয়া-খাওয়া ভুলে পুজো প্রস্তুতিতে নেমেছে।

    বীরভূমের হাটসেরান্দি গ্রামে মণ্ডলবাড়ির বয়স ১৪৩ বছর। অনুব্রত মণ্ডলের প্রপিতামহ গৌরহরি মণ্ডল ওপার বাংলা থেকে নানুরে এসে পুজো শুরু করেন। সারাবছর মন্দিরে পিতলের দুর্গামূর্তি পূজিত। মণ্ডল পরিবারের দুর্গাপুজো গ্রামে আদি পুজো হিসাবেই পরিচিত। দুর্গামন্দিরের বাইরে রয়েছে শিবমন্দিরও। সেখানেও চলে নিত্যসেবা।

    বাড়িতে উঁকি মারতেই দেখা গেল, প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা। ঘর পরিষ্কার চলছে জোর কদমে। মন্দিরে লেগেছে নতুন রং। বাড়ির সদস্যদের ব্যস্ততা তুঙ্গে। এবার যেন পুজোর জৌলুস আরও বেড়েছে। 

    অনুব্রতর গ্রামে ১৮টি দুর্গাপুজো হলেও, কেষ্টর বাড়ির পুজোর ঘিরে তুঙ্গে থাকে উন্মাদনা। পুজোর চার দিন নেতা-মন্ত্রীদের আনাগোনা দেখে অভ্যস্ত গ্রামবাসী। প্রত্যেক বছর বাড়ির পুজোয় অংশ নিয়ে এলাকা মাতিয়ে রাখতেন অনুব্রত। তবে গরু পাচার মামলায় তিহার জেলে বন্দি থাকার সময় পুজোর রং কিছুটা ফিকে হয়েছিল। তবে তিনি স্বমহিমায় ফিরতেই প্রাণ ফিরেছে বাড়িতে। সেই আনন্দের ছাপ স্পষ্ট পুজোতেও।

    চারদিন বিভিন্ন ঘরোয়া অনুষ্ঠান ছাড়াও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। প্রতিদিন গ্রামবাসীদের জন্য থাকে ভুরিভোজের আয়োজন। অনুব্রত জানালেন, “পুজোয় গ্রামের বাড়িতে থাকব। গ্রামবাসীদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ হলে ভালোই লাগে।” অনুব্রতর ভাই প্রিয়ব্রত মণ্ডল বলেন, “প্রতি বছরের মতো এবারও সমস্ত আচার-আচরণ মেনেই দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হচ্ছে।” 

    আশ্বিনের দোরগোড়ায় পাতাবাহারের লালপাতার মতো কোমল রোদ এসে পড়েছে মণ্ডল বাড়ির ঠাকুর দালানে। পাটের আঁশটে গন্ধ বাতাসে। আকাশে ভাসছে ছেঁড়া ছেঁড়া সাদা মেঘ। একমনে মায়ের গায়ে মাটির শেষ প্রলেপ দিচ্ছেন শিল্পী। মায়ের আসতে যে বাকি মাত্র কয়েকটা। 
  • Link to this news (প্রতিদিন)