অগ্নিগর্ভ নেপালে গৃহবন্দি নদিয়ার কল্পনা! আশঙ্কা ও ভয়ে কাটছে দিন
প্রতিদিন | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রমণী বিশ্বাস, নদীয়া: অগ্নিগর্ভ নেপালে গৃহবন্দি কল্পনা বিশ্বাস। নদিয়ার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বেতাই লালবাজারের বাসিন্দা তিনি। দীর্ঘদিন ধরে নেপালের রথোহার জেলার গৌড়ে খাবারের দোকান চালাচ্ছেন। অশান্ত নেপালে সেই দোকান এখন বন্ধ। স্থানীয় কর্মচারীদের ছুটিতে পাঠিয়ে নিজে ঘরবন্দি রয়েছেন। আশঙ্কা ও ভয়ে কাটছে দিন। জানেন না কবে ফিরতে পারবেন বাড়িতে।
কল্পনা জানিয়েছেন, আগুন জ্বলছে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে। লুট হয়েছে ব্যাঙ্ক। তাই নিরাপদ আশ্রয়েও আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। কয়েক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে সমস্যা আরও ভয়াবহ রূপ নেবে এমনটাই আশঙ্কা তাঁর। তিনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে জানিয়েছেন, “সব দোকান বন্ধ। আমার এই ছোট্ট দোকান থেকে যা রোজগার হয় তাই দিয়ে কর্মচারী এবং আমার খরচ রেখে বাকি টাকা বাড়িতে পাঠাতে হয়। বাড়িতে রয়েছে আমার ১২ বছরের মেয়ে, বোন এবং বোনের মেয়ে। ওদের সকলের দায়িত্ব আমার উপরে। কী করব ভেবে উঠতে পারছি না।” তিনি জানিয়েছেন নেপালের যা অবস্থা, তাতে এখনই বাড়ি ফেরা সম্ভব নয়। পুজোয় বাড়ি ফেরার টাকা জমিয়েছিলেন কল্পনা। না ফিরতে পারলে কী হবে সেই ভয়ে আপাতত চিন্তিত তিনি।
ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে কল্পনা দেবীর বাড়ির দুই নাবালিকা সদস্য অবশ্য বিশেষ কিছুই জানে না নেপালের অবস্থা সম্পর্কে। তাঁর মেয়ে জানিয়েছে, “মা নেপালে ভালোই আছে, প্রত্যেকদিন দুই থেকে তিনবার ফোন করে আমাদের খবর নেয়।” দুশ্চিন্তা কমাতে, কল্পনা যে মেয়ের কাছে অনেক কিছুই গোপন রেখেছেন তা নিশ্চিত।
প্রতিবেশী গণপতি হীরা জানাচ্ছেন, কল্পনার একার রোজগারেই সংসার চলে। রুজির টানে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কয়েক বছর আগে নেপালে গিয়েছিলেন। ভাড়া নেওয়া দোকানে ব্যবসা করে, সেই টাকায় সংসার চালান। ওখানকার রোজগার বন্ধ হয়ে গেলে কল্পনা দেবীর সংসারে অনটন নেমে আসবে বলেই দাবি গণপতির। কল্পনার আশা ছিল, সামান্য কিছু জমানো টাকা নিয়ে বাড়ি আসবেন পুজোর সময়। দুই একরত্তিকে নতুন পোশাক কিনে দেবেন। কী হবে কল্পনার ভবিষ্যৎ সেই আশঙ্কায় দিন কাটছে সকলের।