• ফের ব্রিগেডে গীতাপাঠের ডাক ভোটমুখী বঙ্গে, লক্ষ্য পাঁচলাখি জমায়েত, থাকবেন বাগেশ্বরের ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী, ঘোষণা শুভেন্দুর
    আনন্দবাজার | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • দু’বছর আগে ডাক দেওয়া হয়েছিল ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠে’র। কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে সেই অভিনব কর্মসূচি হয়েছিল লোকসভা নির্বাচন ঘোষিত হওয়ার কয়েক মাস আগে। এ বার বিধানসভা নির্বাচনমুখী বঙ্গেও একই কর্মসূচির ডাক। এ বারও ব্রিগেডেই। তবে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ঘোষণা, এ বার পাঁচ লক্ষের জমায়েত।

    বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে মিছিল এবং বিক্ষোভ সমাবেশ হয় শুভেন্দুর নেতৃত্বে। বিজেপির নামে নয়, কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল ‘সনতনী ঐক্য মঞ্চ’ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে। ‘হিন্দুদের উপরে অত্যাচারে’র অভিযোগ তুলে এই বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছিল চণ্ডীপুরে। মিছিল শেষে চণ্ডীপুর থানার সামনে জনসভা করেন শুভেন্দু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সাধু সমাজের লোকজনও। সেই মঞ্চ থেকেই শুভেন্দু ‘পাঁচ লক্ষ হিন্দুর গীতা পাঠ’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

    শুভেন্দু বলেন, ‘‘ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাগেশ্বর ধাম (ধীরেন্দ্র কৃষ্ণ শাস্ত্রী) আসবেন। পাঁচ লক্ষ হিন্দু গীতা পাঠ করবেন ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে।’’ যে সংগঠন এই কর্মসূচি আয়োজনের দায়িত্বে থাকছে, সেই ‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদ’ সূত্রের খবর, ৭ ডিসেম্বর ব্রিগেডে এই কর্মসূচি আয়োজিত হবে বলে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে যোগদানের বিষয়ে বাগেশ্বর ধামের পীঠাধীশ্বর ধীরেন্দ্র কৃষ্ণ শাস্ত্রী সম্মতি দিয়ে দিয়েছেন বলেও সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে। ২০২৩ সালের গীতা পাঠে অবশ্য হাজির ছিলেন দ্বারকাপীঠের শঙ্করাচার্য সদানন্দ সরস্বতী, যিনি হিন্দু ধর্মীয় কাঠামোর চার সর্বোচ্চ পদাধিকারীর অন্যতম।

    ২০২৩ সালে ব্রিগেডে যে গীতাপাঠ হয়েছিল, তার আয়োজনের দায়িত্বে ‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদে’র পাশাপাশি আরও কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠন ছিল। পরে ২০২৪ সালে যখন শিলিগুড়িতে সমবেত গীতাপাঠ হয়, তখন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের সন্ন্যাসী স্বামী প্রদীপ্তানন্দের (কার্তিক মহারাজ) নেতৃত্বাধীন ‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদ’ একাই সে আয়োজন করে। আগামী ডিসেম্বরে ব্রিগেডে গীতাপাঠের আয়োজনও মূলত সেই সংগঠনকে সামনে রেখেই হচ্ছে। তবে ২০২৩ সাল থেকেই শুভেন্দু এই উদ্যোগকে নেপথ্য থেকে যে সমর্থন জুগিয়ে চলেছেন, এ বারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। চণ্ডীপুরের সভা থেকে বৃহস্পতিবার শুভেন্দু যে ভাবে এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছেন, তাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, তাঁর দলবল ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচির তোড়জোড়ে মাঠে নেমে পড়েছে।

    নানা মহলে প্রশ্ন অবশ্য রয়েছে জমায়েতের আকার নিয়ে। ২০২৩ সালে ‘লক্ষ কণ্ঠে’র কথা বলা হয়েছিল। কর্মসূচি শেষে মঞ্চ থেকে দাবি করা হয়েছিল যে, জমায়েতের পরিমাণ এক লক্ষ ৩৭ হাজার। কিন্তু জমায়েতের আকার দেখে অনেকেই সে দাবি সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। তাই প্রশ্ন উঠেছে যে, একলাখি ভিড় জোগাড় করা গিয়েছে কি না, তা নিয়েই যখন দু’বছর আগে সংশয় তৈরি হয়েছিল, তখন এ বার এক লাফে পাঁচলাখি জমায়েতের কথা কেন বলা হল? আয়োজক সংগঠনের কেউ এ প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর দিতে চাইছেন না। তবে তাঁদের দাবি, এ বারের গীতাপাঠে আগের বছরের চেয়ে অনেক বেশি জমায়েত নিশ্চিত করা হবে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)