এক সিপিএম নেতার বাড়ির সামনে টব-সহ বেনাগাছ রেখে যাওয়ার ঘটনাকে ঘিরে শোরগোল পড়েছে পাঁচলার জয়নগরে। গাছে সাদা কাগজে রঞ্জন মণ্ডল নামে ওই নেতার নামও লেখা ছিল। গত রবিবারের এইঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে গাছটি সরিয়ে দেয়। তবে, রঞ্জন-সহ বাম নেতারা মনে করছেন, এ ভাবে পরোক্ষে হুমকি দিয়েছে তৃণমূল। কারণ, হিন্দু ধর্মের রীতি অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তির মৃত্যু ঘটলে যতদিন না তাঁর পারলৌকিক কাজ শেষ হয়, ততদিন পর্যন্ত বাড়িতে বেনাগাছ রাখতে হয়। প্রতিবাদে পথে নামারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বামেরা। তৃণমূল এ কথা মানেনি।
রঞ্জন ওই দিনই থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, তদন্তে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, কেউ মজা করে এই কাজ করেছে। তবে, তদন্ত চলছে। রঞ্জন বলেন, ‘‘এ ভাবে আমাকে দমানো যাবে না। দ্বিগুণ উৎসাহে আমি দলের কাজ করব।’’
গত রবিবার সারা ভারত কৃষকসভার পাঁচলা এরিয়া কমিটির সম্মেলন ছিল জয়নগর প্রাথমিক স্কুলে। এই সম্মেলনের অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি ছিলেন রঞ্জন। তিনি সিপিএমের জয়নগর গ্রাম কমিটির সভাপতিও। দলের এরিয়া কমিটির সম্পাদক পিন্টু হাজরাবলেন, ‘‘বামফ্রন্টের প্রতি জনসমর্থন বাড়ছে। রঞ্জন ছিলেন কৃষকসভার সম্মেলনের অন্যতম উদ্যোক্তা। তাঁকে দমিয়ে দেওয়ার জন্যইতৃণমূল বেনাগাছ পাঠিয়ে পরোক্ষে হুমকি দিয়েছে।"
মঙ্গলবার পাঁচলার বামনেতারা রঞ্জনের বাড়িতে যান। তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দেন তাঁরা। সেখানেই ঠিক হয়, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর এই গ্রামে প্রতিবাদ মিছিল করা হবে বামফ্রন্টের উদ্যোগে। ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা ফরিদ মোল্লা বলেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই ধরনের হুমকি আরও দেওয়া হবে। তারই প্রতিবাদে মিছিল করব।’’একই কথা জানান সিপিএম নেতাপিন্টু হাজরা।
এই অভিযোগকে পাত্তা দেননি পাঁচলার তৃণমূল বিধায়ক গুলশন মল্লিক। তিনি বলেন, ‘‘এখানে সিপিএমকে দূরবিন দিয়ে খুঁজতে হয়। তারা আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়।’’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন ‘‘আসলে একটা সময়ে সিপিএম বিরোধীদের বাড়িতে সাদা থান পাঠিয়ে খুনের হুমকি দিত। বেনাগাছ দেখে সিপিএম তাদের আমলের কুকীর্তির ভূত দেখছে। তৃণমূল এই সব নোংরা কাজের সঙ্গে জড়িত থাকে না।’’