• নেপালের গোলমালে ইন্ধন দিতে সচেষ্ট হতে পারে বেআইনি অস্ত্র কারবারীরা, সীমান্তে থাকতে হবে ‘হাই অ্যালার্ট’...
    আজকাল | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আর কে দাশ (প্রাক্তন বায়ুসেনা কর্তা)

    প্রতিবেশী দেশে গোলমালের অর্থ হল নিজের দেশের সীমান্ত আরও বেশি মজবুত করে তোলা। কারণ, এই মুহূর্তে নেপালে যা পরিস্থিতি তাতে সেখানকার গোলমাল জিইয়ে রাখতে সচেষ্ট হয়ে উঠতে পারে অস্ত্রের চোরা কারবারীরা। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী যেমন নজর রেখে চলেছে তেমনি এর সঙ্গে সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) এবং স্থানীয় পুলিশকেও কড়া নজরদারি চালাতে হবে। কারণ, অসাধু লোকেদের কিন্তু লক্ষ্য থাকে গোলমাল ছড়িয়ে দেওয়ার। যদিও ইতিমধ্যেই নিজেদের মধ্যে সমন্বয় তৈরি করে যৌথভাবে সীমান্ত প্রহরা দিচ্ছে ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি। সেইসঙ্গে ঝুঁকি না নিয়ে সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে সোনাউলি, পানিট্যাঙ্কি এবং যোগবানির মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। 

    এই সময়টা ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর কাছেও একটা পরীক্ষার মতো। খুব মাপা ও সুচিন্তিত পদক্ষেপের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে খেয়াল রাখতে হবে যেন কোনোরকম প্ররোচনার ফাঁদে পা না দিয়ে এই দেশের সেনা ওই দেশের অভ্যন্তরীণ গোলমালে জড়িয়ে না পড়ে। অবশ্যই মানবিক প্রয়োজনটা একেবারেই আলাদা। সেখানে যদি প্রয়োজন পড়ে তবে অবশ্যই সেটা ভেবে দেখার মতো দিক। 

    যেহেতু হিমালয়ের কোলে ওই দেশটিতে এখন গোলমাল চলছে এবং বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটছে সেক্ষেত্রে ভারতীয় সেনাকে এখন প্রস্তুত থাকতে হবে মানবিক ও বিপর্যয় মোকাবিলার মতো দিকগুলিতে প্রয়োজন অনুযায়ী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। পরিস্থিতি যদি আরও খারাপ হতে থাকে তবে সেক্ষেত্রে ওদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের নিরাপদে সেখান থেকে বের করে নিয়ে আসা বা চিকিৎসার প্রয়োজনে সহায়তা করা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সাহায্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ভারতীয় সেনাকে তৈরি থাকতে হবে। অবশ্যই সেটার জন্য নেপাল সরকারের সঙ্গে কথা বলে করতে হবে। 

    এর সঙ্গে চালিয়ে যেতে হবে কূটনৈতিক দৌত্য। যে কোনোভাবেই নেপালের এই অভ্যন্তরীণ গোলমাল থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখতে হবে। ইতিমধ্যেই ভারতের পক্ষ থেকে কথার মধ্য দিয়ে নেপালের বর্তমান পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের মধ্যে এই ধারণা যেন কোনোভাবেই না হয় যে ভারত তাঁদের বিষয়ে অযাচিতভাবে নাক গলাচ্ছে। 

    এই সময়ে ভারতকে নেপালের প্রশাসন এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে হবে। কীভাবে উত্তেজিত জনতাকে বাগ মানানো যায় সেবিষয়ে যদি নেপাল সাহায্য চায় তবে অবশ্যই সাহায্য করতে হবে। সীমান্ত এলাকায় অপরাধ দমনে তথ্যের আদান প্রদান করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে সাময়িক এই গোলমাল কাটিয়ে উঠে নেপালের জনগণকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে যা যা সহায়তার প্রয়োজন সেটা যদি নেপাল সহায়তা চায় তবে অবশ্যই এগিয়ে যেতে হবে। কারণ, নেপাল শুধু ভারতের প্রতিবেশী দেশ নয়, এই দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্ক বহু পুরনো এবং অবিচ্ছেদ্য।
  • Link to this news (আজকাল)