আজকাল ওয়েবডেস্ক: কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন সাময়িকভাবে বন্ধ থাকায় বর্তমানে ব্লু লাইনে পরিষেবা চালানো হচ্ছে দক্ষিণেশ্বর থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত। তবে কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে সব ট্রেন শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত চালানো সম্ভব হচ্ছে না। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, এই সমস্যার ফলে দমদম-কবি সুভাষ শাখায় ২৭২টি পরিষেবার মধ্যে ব্যস্ত সময় ও অন্যান্য সময় মিলিয়ে ৩২টি ট্রেন মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশন থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে দক্ষিণেশ্বরের দিকে। এতে পিক আওয়ারে ৫ মিনিট অন্তর এবং নন-পিক আওয়ারে ৭ মিনিট অন্তর ট্রেন চলাচল বজায় রাখা সম্ভব হচ্ছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের সহযোগিতা ছাড়া এই ব্যবস্থা সুচারুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
কিন্তু বর্তমানে অনেক যাত্রী মহনায়ক উত্তমকুমার স্টেশনে নামতে অস্বীকার করছেন, ফলে পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটছে এবং এর প্রভাব গোটা নেটওয়ার্কে পড়ছে।মেট্রো রেলওয়ে আরও জানিয়েছে, মহনায়ক উত্তমকুমার স্টেশনে শেড নতুন করে তৈরি করা, শহিদ ক্ষুদিরাম স্টেশনে রেক রিভার্সাল সুবিধা তৈরি এবং কবি সুভাষ স্টেশন পুনরুদ্ধারের জন্য পরিকল্পনা চলছে। প্রতিটি সমস্যার আলাদা করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে এবং খুব শীঘ্রই এই পরিস্থিতির উন্নতি চোখে পড়বে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফে। জানা গিয়েছে, শনিবার রেলওয়ে বোর্ডের সদস্য (অপারেশনস অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট) শ্রী হিতেন্দ্র মালহোত্রা কলকাতার কবি সুভাষ, শহিদ ক্ষুদিরাম, মহনায়ক উত্তমকুমার ও এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশন পরিদর্শন করেন। তিনি কবি সুভাষ স্টেশন পুনরুদ্ধারের অগ্রগতি এবং যাত্রী সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ভিড় নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা পর্যালোচনা করেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, উৎসবের মরসুমে কেনাকাটা এবং মেট্রো নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের ফলে যাত্রী সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। সে কারণে পুজোর আগে মেট্রো রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজারসহ সমস্ত বিভাগের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয় পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য। মেট্রোরেল কোনওরকম সঠিক পরিকাঠামো ও পরিকল্পনা না নিয়েই এই ধরনের সম্প্রসারণের কাজ করেছে বলে একপ্রকার ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন বেশিরভাগই। ভিড়ের কারণে দরজা বন্ধ হতে দেরি হওয়ায় দেরি হচ্ছে মেট্রোর নির্ধারিত সময়েও।
প্রতি পাঁচ মিনিট অন্তর মেট্রো চলাচল করলেও সিগনালিং ব্যবস্থা ঠিক রাখা যাচ্ছে না, কারণ আগের মেট্রো একটি সঠিক দূরত্বে না গেলে পরের মেট্রো রেলকে চালনা করা বা প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়া সম্ভব হয়ে উঠছে না। এমনটাই জানিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ। মেট্রোরেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিক রূপায়ণ মিত্র এই বিষয়ে বলেন, ‘পূর্বের থেকে মেট্রোরেলের যাত্রীসংখ্যা কয়েক গুণ বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে পরিষেবার দিক থেকে। আমরা যত শীঘ্র সম্ভব এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। মেট্রোরেলের সংখ্যা আপাতত একই থাকবে তবে পরিকাঠামো ও পরিষেবা কে আরোও কিভাবে উন্নত করা যায় আমরা সেই চেষ্টা করছি।’
প্রতিদিনই নিত্যযাত্রীদের ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে টিকিট কাউন্টারগুলিতে। টিকিট কাটার পর প্ল্যাটফর্মেও প্রচণ্ড ভিড়। নেই কোন পরিকাঠামো, নেই কোনও সুব্যবস্থাও। যার ফলে চরম ভোগান্তি সাধারণ মানুষের। কিন্তু মেট্রো রেলের আয়ের গ্রাফ যথেষ্ট ঊর্ধ্বমুখী পূর্বের তুলনায়। এমনটাই জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। মেট্রোরেলের আয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রূপায়ণ মিত্র বলেন, ‘টিকিটের বিষয়টি নির্দিষ্ট করে এক্ষুনি বলা সম্ভব নয়, তবে পূর্বের থেকে টিকিট বিক্রির পরিমাণ অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে এবং একই সঙ্গে আয় অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সেটা নির্দিষ্ট করে এক্ষুনি কিছু বলা সম্ভব নয়।’