নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: দেশের পনেরোতম উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে আজ শপথ নেবেন সি পি রাধাকৃষ্ণন। রাষ্ট্রপতি ভবনে, সকাল ১০টায়। নতুন উপরাষ্ট্রপতির এই শপথ অনুষ্ঠান যাতে বিরোধীরা ‘বয়কট’ না করে, তা সুনিশ্চিত করতে রীতিমতো তৎপর মোদি সরকার। নেওয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। নিমন্ত্রণ গিয়েছে সব পক্ষের নেতানেত্রীর কাছে। রাষ্ট্রপতি ভবনে নামও পাঠানো হয়েছে। বিরোধীদের প্রার্থী বুচিরেড্ডি সুদর্শন রেড্ডিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে খবর। এদিকে, বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সি পি রাধাকৃষ্ণন। এই পর্বে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপালের কার্যভার সামলাবেন গুজরাতের রাজ্যপাল আচার্য দেবব্রত।
রাজনৈতিক সূত্রে খবর, উপরাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর সিংহভাগ বিরোধীই সি পি রাধাকৃষ্ণনকে শুভেচ্ছা জানাননি। তবে আজ শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে তাঁরা অংশ নেবেন। পদাধিকারবলে দেশের উপরাষ্ট্রপতিই রাজ্যসভার চেয়ারম্যান। সভা পরিচালনায় মূল দায়িত্ব তাঁরই। তাই কংগ্রেসের পক্ষে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে, তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েনের পাশাপাশি বিরোধী দলের অধিকাংশ রাজ্যসভার সদস্যই আজ রাষ্ট্রপতি ভবনে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, বুচিরেড্ডি সুদর্শন রেড্ডি কেন প্রত্যাশার চেয়ে কম ভোট পেলেন, তা নিয়ে এখনও সংশয়ে বিরোধীরা। এনডিএ প্রার্থী সি পি সুদর্শন রেড্ডির ভোট কীভাবে বেড়ে ৪৫২ হল এবং বুচিরেড্ডি কেন ৩০০ ভোট পেলেন, সেই অঙ্ক মেলাতেই আপাতত ব্যস্ত বিরোধী শিবির। ‘ক্রস ভোট’ যে হয়েছে, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু নিজেদের প্রার্থীর বদলে কারা, কোন স্বার্থে ক্রস ভোট দিলেন, তা নিয়ে বিরোধী দলের মধ্যে গুঞ্জন চলছে। বিরোধীদের হিসেব অনুযায়ী, সুদর্শন রেড্ডির কমপক্ষে ৩১৫ ভোট পাওয়ার ছিল। কিন্তু বিরোধী নেতানেত্রীদের ‘সন্দেহ’ কংগ্রেসের এক, সমাজবাদী পার্টির দুই, আম আদমি পার্টির চার, উদ্ধবপন্থী শিবসেনার তিন, শারদপন্থী এনপিপি’র দুই এবং একজন নির্দল ক্রস ভোট করেছেন বা ভোট নষ্ট করেছেন।
‘অপারেশন সিন্দুর’ ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদির প্রশংসার পর থেকেই অনেকেই কংগ্রেসের শশী থারুরকে সন্দেহের চোখে দেখছেন। তাই রাজনৈতিক মহলের একাংশ ক্রস ভোটারের তালিকায় উপরের দিকে থারুরের নাম রাখছেন। কারও কারও মতে, রাজীব শুক্লা, মণীশ তিওয়ারিও হতে পারেন। শিবসেনার প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী, আপের স্বাতী মালিওয়ালের মতো সাংসদের দিকেও আঙুল তুলছেন অনেকে। অবশ্য সবটাই অভিযোগ। ক্রস ভোট কে কে দিয়েছেন, তা নিশ্চিতভাবে জানা সম্ভব নয়। ফলে বিরোধী শিবিরজুড়ে শুধু জল্পনাই চলছে। প্রমাণ নেই কোনও।