• শিলিগুড়িতে অনুপ্রবেশের শঙ্কা, পানিট্যাঙ্কিতে নজরদারি আরও বাড়াল পুলিশ ও এসএসবি
    বর্তমান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: অগ্নিগর্ভ প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল। একাধিক জেল ভেঙে পালিয়েছে হাজার হাজার দাগি অপরাধী! শরণার্থীর বেশে ওই অপরাধীরা ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করছে বলে সন্দেহ। তাই ‘চিকেন নেক’ শিলিগুড়ির সুরক্ষায় নেপাল সীমান্তের তিন জায়গায় কড়া নজরদারি শুরু করেছে পুলিশ ও এসএসবি। পানিট্যাঙ্কিতে মেচি নদী বরাবর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। চলছে নাকা তল্লাশি ও রুটমার্চ। নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামে টহল দিচ্ছেন পুলিশের শীর্ষ অফিসাররা। দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক প্রীতি গোয়েল বৃহস্পতিবার পানিট্যাঙ্কির সহায়তা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ নেপালে আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধারে সহায়তা বুথ ও হেল্প লাইন চালু করেছে। 

    দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ বলেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপালে গোলমালের পর থেকেই জেলার তিনটি জায়গায় নাকা তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যাতে সেই দেশ থেকে কোনও দুষ্কৃতী এপারে প্রবেশ করতে না পারে। এজন্য এসএসবি’র সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়েছে। ওদিকে আটকে থাকা ভারতীয়দের উদ্ধারে সহায়তা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, পানিট্যাঙ্কির সহায়তা কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। সমগ্র পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হয়েছে।    

    কয়েকদিন ধরেই জেন-জি’দের বিদ্রোহে উত্তপ্ত নেপাল। হিমালয়বেষ্টিত এই প্রতিবেশী রাষ্ট্র এখন জ্বলছে। অরাজকতার সুযোগে বিভিন্ন জেল ভেঙে পালিয়েছে কমপক্ষে ১৫ হাজার বন্দি। যার মধ্যে রয়েছে কয়েকজন পাক জঙ্গিও। যারা গা ঢাকা দিতে ভারতে প্রবেশে চেষ্টা করছে। ওই দুষ্কৃতীরা উত্তরপ্রদেশ ও বিহারের মতো দার্জিলিং জেলা দিয়েও অনুপ্রবেশ করতে পারে বলে আশঙ্কা। 

    দার্জিলিং জেলার পাহাড় ও সমতলে বেশকিছু অংশ নেপাল সীমান্তবর্তী। সমতল শিলিগুড়ির পানিট্যাঙ্কি আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর। এতদিন পর্যন্ত মেচি নদীর পাড়ে অবস্থিত এই বন্দর দিয়ে দু’দেশের লোক অবাধে যাতায়াত করতে পারতেন। কিন্তু নেপালে বিদ্রোহের আগুন জ্বলার পর সংশ্লিষ্ট সীমান্তে কড়াকড়ি করা হয়েছে। মেচি নদীর দু’টি সেতুর পাশে দু’টি নাকা চেকপোস্ট বসিয়েছে দার্জিলিং জেলা পুলিশ। তারা সংশ্লিষ্ট এলাকার শ্যাডোজোনে বসিয়েছে সিসি ক্যামেরা। পাশাপাশি নিয়মিত এসএসবি’র সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছে। এসএসবিও পানিট্যাঙ্কিতে মেচি নদীর পাড়ে ঘনঘন রুটমার্চ করছে। ক্যাম্পে স্পিড বোট রেখেছেন জওয়ানরা। প্রয়োজন পড়লে নদীতে বোট নামিয়ে টহল দেবেন। 

    মেচি নদীর ওপারে নেপালের কাঁকরভিটার কাছে ভারতীয় গ্রাম মেচিবস্তি। নিয়মিত সংশ্লিষ্ট গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের খোঁজখবর নিচ্ছে পুলিশ ও এসএসবি জওয়ানরা। এর বাইরে মিরিক ও মানেভঞ্জন নেপাল সীমান্তবর্তী। মিরিক থেকে দার্জিলিং যাওয়ার পথে নেপালের একাধিক জায়গা অতিক্রম করতে হয়। যা নেপালের পশুপতি এলাকার মধ্যে পড়ে। মানেভঞ্জ থেকে হেঁটে নেপালে যাওয়া যায়। তাই মানেভঞ্জন ও মিরিকের নাকা তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। 
  • Link to this news (বর্তমান)