• পাট্টা না নেওয়া ভূমিহীনদের রাজ্য ছাড়ার হুমকি, বিজেপির প্ররোচনা দেখছে তৃণমূল
    বর্তমান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মানিকচক: ভূতনিতে পাট্টা ঘিরে জলঘোলা। নিরাপদ স্থানে পাট্টার জমি না দিলে রাজ্য ছাড়ার হুমকি কালুটোনটোলার ভূমিহীনদের। তাঁদের দাবি, নিরাপদ জায়গায় জমি না দিলে রাজ্যে থেকে আর কী করবেন। তবে, এই ঘটনায় বিজেপি, সিপিএমের বিরুদ্ধে অসহায় মানুষদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দুর্গতদের সামনে রেখে বিরোধীরা রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে বলেও দাবি শাসক দলের নেতৃত্বের। 

    ভূতনির উত্তর চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত কালুটোনটোলা গ্রাম। গত কয়েক বছরে ভাঙনে বারবার গ্রাম হারিয়ে বর্তমানে ভূতনির রিং বাঁধে বাস করছেন   বাসিন্দারা। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ভূমিহীনদের পাট্টা দেওয়া হয়। সেই তালিকায় ছিলেন কালুটোনটোলা গ্রামের প্রায় ৪৬ জন ভূমিহীন। কিন্তু পাট্টা নিতে যাননি তাঁরা। দাবি ছিল, প্রশাসনের দেওয়া পাট্টার জমি একেবারে নবনির্মিত রিং বাঁধের পাশে। গঙ্গা ভাঙনে তলিয়ে যেতে বসেছে রিং বাঁধ। এভাবে চলতে থাকলে এক বছরে পাট্টার জমিও চলে যাবে। তাই জমি নিতে অস্বীকার করেন বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজ্য ছাড়ার হুমকি দেন স্থানীয় বৃদ্ধা বোলি মাহাতো সহ আরও অনেকে। তাঁরা বলেন, বারবার জমি, ঘরবাড়ি হারিয়েছি। একমাসের বেশি সময় বাঁধে থাকছি। আর সেখানেই জমি দিচ্ছে প্রশাসন। আমরা ভূতনিতে পাট্টার জমি চাই না। আমাদের কম জায়গা দিক, কিন্তু ভূতনিতে নয়। দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা না করলে ঝাড়খণ্ডে চলে যেতে বাধ্য হব।

    কিন্তু ভিনরাজ্যে গেলেও তো তাঁরা ভূমিহীন থাকবেন। সেখানে বাসস্থানের ব্যবস্থা কে করবে? উত্তর চণ্ডীপুর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য তথা স্থানীয় বাসিন্দা বীরবল মাহাতো বলেন, ঝাড়খণ্ড প্রশাসন সবসময় এরাজ্যের ভাঙন কবলিতদের ডাকে। সেখানে গেলেই থাকার জায়গা ও কাজের ব্যবস্থা করে দেয়। পরবর্তীতে সেখানকার বাসস্থানের নথিও দেওয়া হয়।

    এর পিছনে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন মানিকচক ব্লক তৃণমূল সহ-সভাপতি ইমরান হাসান। তিনি বলেন, বারবার স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব ভূতনির ভাঙন কবলিত এলাকায় গিয়ে ভুল বুঝিয়ে বিভ্রান্ত করছেন। রাজ্য সরকার সব সময়ই দুর্গতদের পাশে রয়েছে। পাট্টা নিয়ে সমস্যার কথা বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রকে জানিয়েছি। তিনি দ্রুত মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে বিকল্প জমির ব্যবস্থা করবেন।

    পাল্টা দক্ষিণ মালদহের জেলা বিজেপি সাধারণ সম্পাদক গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, রাজ্য সরকার গঙ্গা ভাঙন রুখতে ও স্থায়ী বাসস্থান দিতে ব্যর্থ। তাই হয়তো বাসিন্দারা এই পদক্ষেপ নিয়েছেন। এতে বিজেপির প্ররোচনা নেই।
  • Link to this news (বর্তমান)