নোড়া দিয়ে পাঁজর ভাঙার পর বিষ খাইয়ে খুন স্বামীকে, ধৃত, পলাতক শ্যালিকা, শোরগোল হরিশ্চন্দ্রপুরের গ্রামে
বর্তমান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, হরিশ্চন্দ্রপুর: চরম নৃশংসতা! দাবিমতো জমি লিখে না দেওয়ায় নোড়া দিয়ে স্বামীর পাঁজর ভেঙে দিলেন বধূ। বেধড়ক মারধরের পর বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী এবং শ্যালিকার বিরুদ্ধে। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের পারশটোলা গ্রামে। মৃতের পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে স্ত্রী হেনা পারভিনকে। পলাতক শ্যালিকা আদরি বিবির খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত আনসারুল হকের (৪৮) বাড়ি পারশটোলা। প্রায় ২০ বছর আগে তাঁর সঙ্গে বিয়ে হয় ঘরোট গ্রামের হেনার। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই স্বামীর সঙ্গে বনিবনা হতো না হেনার। মা ও ভাইদের কথা শুনে স্বামীকে মাঝেমধ্যেই মারধর করত। অশান্তি বাড়তে থাকায় গ্রামে একাধিকবার সালিশি সভা হয়েছিল। মাস তিনেক আগে বড় মেয়ে দিদার বাড়ি ঘরোট গ্রামে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়। এনিয়েও পরিবারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চলছিল। তা চরম আকার নেয় আনসারুল মাসখানেক আগে ১৩ লক্ষ টাকায় ১০ কাঠা জমি কেনার পর। সেই জমি স্ত্রী তার নামে লিখিয়ে দিতে বলে। প্রস্তাবে রাজি হননি আনসারুল। পরে দু’জনের নামে অর্ধেক করে জমি রেজিস্ট্রি হয়েছিল। এনিয়ে বুধবার সকালে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে ফের বিবাদ হয়। পরে পাঁচলা গ্রাম থেকে মাসির বোনকে ডেকে নিয়ে এসে দু’জন মিলে আনসারুলকে মাটিতে ফেলে নোড়া ও বাঁশ দিয়ে পাঁজরে আঘাত করে ভেঙে দিয়ে মুখে বিষ ঢেলে দেয়। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা গিয়ে যুবককে উদ্ধার করে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে চিকিৎসক মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করে দেন। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানেই মৃত্যু হয় আনসারুলের। পুলিশ দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর পর সন্ধ্যায় বাড়িতে নিয়ে আসেন পরিবারের লোকেরা।
মৃতের মা আনোরা বিবি বলেন, দাবিমতো সম্পূর্ণ জমি লিখে না দেওয়ায় ছেলেকে খুন করে দিল বউমা। তার অত্যাচারেই তিনমাস আগে বড় মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। বউমা আমাদের পরিবারের কাউকে একেবারে সহ্য করতে পারত না। সামান্য কারণে অশান্তি করে স্বামীকে মারধর করত। খুনের ঘটনায় তার মাসির মেয়েও জড়িত।
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি মনোজিৎ সরকার বলেন, স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যজনের খোঁজ চলছে।
কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃতের পরিজনরা। - নিজস্ব চিত্র।