• কৃষ্ণনগর পুরসভার বাজেটে কোনও আর্থিক অনিয়ম হয়নি, জানাল হাইকোর্ট, স্বস্তিতে অপসারিত চেয়ারপার্সন
    বর্তমান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: স্বস্তি কৃষ্ণনগর পুরসভার। অবৈধভাবে বাজেট পাশের যে মামলা উচ্চ আদালতে করা হয়েছিল, তা বুধবার খারিজ করা হয়। যার ফলে মুখ পুড়ল পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারপার্সনের বিরোধী গোষ্ঠীর। তাঁদের তরফেই এই মামলা করা হয়েছিল। মামলা খারিজ হওয়ায় কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারপার্সন রীতা দাস। আদালতের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, ডিএলবির রিপোর্টে পুরসভার বাজেট নিয়ে কোনও আর্থিক অনিয়ম পাওয়া যায়নি।‌

    এব‌্যাপারে অপসারিত চেয়ারপার্সন রীতা দাস বলেন, সত্যের সর্বদাই জয় হয়। বাজেট পাশ নিয়ম অনেকেই অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন। আমি প্রথম থেকেই বলে এসেছি, অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা।‌ বাজেট নিয়ে যে কোনও অনিয়ম হয়নি, সেটা আদালতের অবস্থানে স্পষ্ট হল। কিছু মানুষ নাগরিক পরিষেবা ব্যহত করে এবছর পুরসভার বাজেট পাশে বাধা দিয়ে গেলেন। সিনিয়র অ্যাডভোকেট অনিরুদ্ধ চট্টোপাধ্যায় এই মামলায় রীতা দাসের হয়ে সওয়াল করেছিলেন। প্রাক্তন চেয়ারপার্সনের পক্ষের অপর আইনজীবী অর্জুন সামন্ত বলেন, বিরোধী পক্ষের তরফ থেকে আদালতে মামলা করা হয়েছিল। আদালতের কাছে করা তাঁদের আবেদনে বলা হয়েছিল যে, এফআইআর করার নির্দেশ দিয়ে বাজেট নিয়ে ডিএলবি আর সরকার যেন তদন্ত করে। কিন্তু উচ্চ আদালত এই মামলা খারিজ করে। আদালতে বলেছে, ডিএলবি’র রিপোর্টে কোনও অনিয়ম পাওয়া যায়নি। তবে ভাইস চেয়ারম্যান তথা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নরেশ চন্দ্র দাস বলেন, আমি কিছু জানি না। খোঁজ নেব। 

    চলতি বছরের মার্চ মাসে কৃষ্ণনগর পুরসভায় বাজেট মিটিং হয়। কিন্তু চেয়ারপার্সন গোষ্ঠী ও তার বিরোধী গোষ্ঠীর বিবাদে সেই বাজেট অধিবেশন বাতিল হয়। তারপর থেকে প্রায় ছ’ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল কাউন্সিলারদের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে বাজেট মিটিং হয়নি। তাতে নেতৃত্বের একাংশের মদতও ছিল। সেই সময়ে চেয়ারপার্সনের বিরোধী গোষ্ঠীর কাউন্সিলাররা, পুরসভার বিরোধীরা অবৈধভাবে বাজেট পাশ করানোর অভিযোগ তুলেছিল রীতা দাসের বিরুদ্ধে। সেই নিয়ে ডিএলবি’র কাছেও অভিযোগ জানিয়েছিল চেয়ারপার্সনের বিরোধী গোষ্ঠীর কাউন্সিলররা। হাইকোর্টে এই নিয়ে মাস দুই আগেই মামলা করা হয় বিরোধী গোষ্ঠীর তরফ থেকে। এরই মধ্যে কৃষ্ণনগর পুরসভার চেয়ারপার্সন রীত দাসের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তাঁকে অপসারণ করা হয়। দলের নির্দেশ উপেক্ষা করে চেয়ারপার্সনকে সরানো ভালোভাবে নেয়নি শীর্ষ নেতৃত্ব। আর সেটা পরোক্ষভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিল পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর। অপসারণের পরের দিনই নগরোন্নয়ন দপ্তরের তরফ থেকে, শহরের নাগরিক পরিষেবা অচল রাখার জন্য পুরসভার সমস্ত কাউন্সিলারকে শোকজ করা হয়। সেইসঙ্গে বোর্ড কেন ভাঙা হবে না, তা নিয়ে জবাবদিহি চাওয়া হয়।‌ অন্যদিকে উচ্চ আদালতের তরফ থেকে ডিএলবির কাছে আর্থিক অনিয়মের রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়। কিন্তু সেই রিপোর্টে অনিয়ম পাওয়া যায়নি।
  • Link to this news (বর্তমান)