• ভগবান বুদ্ধের দেশে হিংসা, অশান্তির আগুন জ্বলছে সর্বত্র, ভয়াবহ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে ফিরছেন বর্ধমানের বাসিন্দারা
    বর্তমান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ভগবান বুদ্ধের দেশে তখনও শান্তি বিরাজ করছিল। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা এই দেশে পা রাখলেই মনে অন্যরকম শান্তি নেমে আসে। সেই দেশেই এভাবে বিদ্রোহের আগুন ছড়িয়ে পড়বে, তা টের পাননি বর্ধমানের সরাইটিকরের সৈয়দ আরজাদ হোসেন বা কবিতা খাতুনরাও। গত ৮ সেপ্টেম্বর তাঁরা নেপালের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। চোখের চিকিৎসার জন্য আগেও তাঁরা সেখানকার হাসপাতালে গিয়েছিলেন। চিকিৎসা করে সুস্থভাবেই নিজের শহরে ফিরেছিলেন। এবার তাঁদের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ অন্যরকম। তাঁদের মতো এই জেলার অনেকেই সেখানে গিয়ে আটকে পড়েছিলেন। প্রশাসনের তৎপরতায় তাঁরা ঘরে ফিরছেন। তবে যে ভয়াবহ দৃশ্যের সাক্ষী তাঁরা থাকলেন, তা কোনওদিন ভুলতে পারবেন না।

    বর্ধমানের বাসিন্দা সৈয়দ আরজাদ হোসেন বলেন, এবার নেপালে পৌঁছনোর পর থেকে নানা কথা কানে আসছিল। সোশ্যাল মিডিয়ার উপর সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করায় যুবসমাজ ফুঁসছে। কিন্তু এভাবে অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়বে, তা টের পাওয়া যায়নি। শান্তির দেশে হিংসার আগুন জ্বলতে থাকে। পথ তখন বিদ্রোহীদের দখলে। হাসপাতালে কিছু হয়নি। কিন্তু ভয়ে আমরা হোটেলে বন্দি হয়েছিলাম। সেনাবাহিনীর তৎপরতায় আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে আসি। তিনি আরও বলেন, দুই বর্ধমান জেলার অনেকেই সেখানে গিয়েছিলেন। কেউ ঘুরতে, আবার কেউ চিকিৎসার জন্য কয়েকদিন আগে সেখানে যান। তাঁদের সকলকে ফিরতে হয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরা পর্যটকদের উপর আক্রমণ করেননি। বরং সহযোগিতা করেছেন।

    এরাজ্য থেকে অনেকেই চোখের চিকিৎসার জন্য নেপালে যান। অনেকে আবার পুজোর ছুটিতে সেখানে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু এই ঘটনার পর অনেকেই সংশয়ে পড়ে গিয়েছেন। এক ট্যুর অপারেটর বলেন, বর্ধমান থেকে অনেকেই নেপালে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলেছিলেন। অনেকের টিকিট কাটা হয়ে গিয়েছে। তাঁদের কেউ কেউ এখন টিকিট বাতিল করতে চাইছেন। অনেকে আবার আরও কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে চাইছেন। পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে তাঁরা আবার যাবেন। নেপালের ট্যুর নিয়ে কোনওদিনই চিন্তা করতে হয়নি। কিন্তু উৎসবের মরশুমে সেখানকার পরিবেশ বদলে যাওয়ায় ব্যবসায় মন্দা নেমে আসবে। আর কয়েকদিন অশান্তি চললে অনেকেই টিকিট বাতিল করে দেবেন। বর্ধমানের আরেক বাসিন্দা বলেন, চোখের চিকিৎসার জন্য তিনবার নেপাল গিয়েছি। ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরেছি। আর এবার সেখান থেকে সুস্থ অবস্থায় ফিরতে পারব কি না, তা নিয়েই দুশ্চিন্তা গ্রাস করেছিল।  জ্বলছে নেপাল। 
  • Link to this news (বর্তমান)