আবাসিকরা প্রবীণ, মেয়রের হস্তক্ষেপে এবার বহুতলে বসল লিফ্ট এবং ফুটব্রিজ
বর্তমান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কলকাতা পুরসভার বিশেষ অনুমোদনের পর সমস্যার সমাধান। উল্টোডাঙায় আড়াই দশক পুরনো একটি আবাসনে বসল লিফ্ট। সঙ্গে বসল সংযোগকারী স্বল্প দৈর্ঘ্যের তিনটি ফুটব্রিজও। এর ফলে খুশি সেখানকার প্রবীণরা।
জানা গিয়েছে, বাসিন্দারা পুরসভার কাছে লিফ্ট বসানোর জন্য অনুমোদন চেয়েছিলেন। কিন্তু আবাসনের ভিতরে লিফট বসানোর জায়গা ছিল না। পুর আইনের বিধি মেনে আবাসনের বাইরের দিকে লিফ্ট বসানোর ক্ষেত্রে ছিল জটিলতা। ফলে দীর্ঘদিন বিষয়টি আটকে ছিল। পরে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের হস্তক্ষেপে জটিলতা কাটে। আবাসনে বেশিরভাগ ফ্ল্যাটেই ৭৫ উর্ধ্ব বাসিন্দার বাস। তাই মেয়রের নির্দেশ মেনে শহরে এই প্রথম কোনও পুরনো আবাসনে নিয়ম শিথিল করে বাইরের দিকে লিফ্ট বসানোর অনুমতি দেয় পুরসভা। বৃহস্পতিবার তা চালু হয়েছে। পাঁচতলা দু’টি আবাসন একসঙ্গে জোড়া। উল্টোডাঙা সি আই টি রোডে অবস্থিত কিঙ্কিনি আবাসনে রয়েছে ৩২টি ফ্ল্যাট। কিন্তু এতদিন সেখানে লিফট ছিল না। আবাসিকরা বেশিরভাগই প্রবীণ। ফলে তাঁরা পুরসভার কাছে লিফ্ট ও সংযোগকারী ফুটব্রিজ তৈরির অনুমোদন চান। কিন্তু পুর আইনের বিধিতে সেখানে লিফ্ট বানানোর অনুমতি দেওয়া সম্ভব ছিল না। আবাসনের বাসিন্দা কল্যাণকৃষ্ণ দেব বলেন, ‘কেএমডিএ’র থেকে জমি নিয়ে কো-অপারেটিভ সোসাইটি করে আবাসন বানানো হয়েছিল। ১৯৯৮ সাল থেকে বসবাস শুরু। তখন লিফটের সংস্থান রাখা হয়নি। এখন সবাই প্রায় প্রবীণ। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা সমস্যার হয়ে উঠেছে। তাই পুরসভার বিল্ডিং বিভাগে লিফ্টের জন্য আবেদন জানানো হয়। কিন্তু তা খারিজ হয়ে যায়।’ কল্যাণবাবু আরও বলেন, ‘তারপর আমরা বরো চেয়ারম্যান অনিন্দ্যকিশোর রাউতের সঙ্গে যোগাযোগ করি। ফেডারেশন অব হাউসিং কো-অপারেটিভ সোসাইটির চেয়ারম্যান আশিস চক্রবর্তীকেও বিষয়টি জানাই। মেয়রের কাছে খবর পৌঁছয়। অবশেষে তাঁর হস্তক্ষেপে জটিলতা কাটে।’
পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক কর্তা বলেন, শহরের বিভিন্ন পুরনো আবাসনে লিফ্ট তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু এটি ব্যতিক্রম। কারণ বাইরে দিয়ে শুধু লিফ্ট তৈরি নয়, তার সঙ্গে তিনটি তলা যুক্ত করতে ফুটওভার ব্রিজও বানানো হতো। লিফট তৈরির জন্য যত জায়গা দরকার, ততটাও নেই। ‘ওপেন স্পেস’ প্রায় থাকছিল না। যেহেতু ওখানে প্রায় সকলেই বয়স্ক ও তাঁদের নানা শারীরিক সমস্যা রয়েছে তাই মেয়রের নির্দেশে মানবিক দিক থেকে বিশেষ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বরো চেয়ারম্যান অনিন্দ্যকিশোর রাউত বলেন, ‘আইন অবশ্যই মানতে হবে। কিন্তু বয়স্ক মানুষের সুবিধার দিকও দেখা প্রয়োজন। মেয়র বিষয়টি জানা মাত্রই হস্তক্ষেপ করেন। এই প্রথম শহরের বুকে এমন অনুমোদন দেওয়া হল।’-নিজস্ব চিত্র