• নেই জলের উৎস-কাজ করে না যন্ত্রও, শহরে ১৩টি পুর বাজারে বেহাল অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা
    বর্তমান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শহরের পুর-বাজারগুলিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা অনেকাংশেই নেই। যা আছে তারও বেহাল অবস্থা। দেখভালের বালাই নেই। কলকাতা পুরসভার ১৩টি বাজারে ফায়ার অডিট হয়েছে। তারপর সেখানকার অগ্নিসুরক্ষার বেহাল ছবি দমকলের রিপোর্টে উঠে এসেছে। সে রিপোর্ট পুরসভার কাছে পেশ হয়েছে। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, দমকলের প্রস্তাব এবং পরামর্শ মেনে অগ্নি সুরক্ষা বিধির কাজ হবে পুর-বাজারগুলিতে। যদিও এই কাজে বিপুল খরচ। সে টাকা কিভাবে আসবে তা নিয়ে সন্দিহান পুরকর্তাদের একাংশ।

    খিদিরপুর অরফ্যানগঞ্জ বাজারে অগ্নিকাণ্ডের পর শহরের বিভিন্ন পুর-মাকের্টের ফায়ার অডিটের সিদ্ধান্ত নেয় পুরসভা। আপাতত কলেজ স্ট্রিট, বাঁশদ্রোণী, লেক রোড, নিউ আলিপুর, পার্ক সার্কাস, গড়িয়াহাট, বকুলতলা সহ ১৩টি মার্কেটে ‘ফায়ার অডিট’ হয়েছে। সাত জুলাই থেকে ২২ জুলাইয়ের মধ্যে পুর-আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে এই বাজারগুলির অগ্নি-নির্বাপণ পরিকাঠামোর হাল খতিয়ে দেখেছে দমকল। কোথায় কোথায় নতুন কী কী তৈরি করতে হবে, সেগুলি নিয়েও পর্যালোচনা হয়েছে। দমকলের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ১৩টির মধ্যে পাঁচটি বাজারে কাছাকাছি কোনও ‘স্প্রাউট’ বা জলের উৎস নেই, যেখানে দমকলের পাইপ লাগিয়ে অগ্নিকাণ্ডের সময় জল দেওয়া যায়। কয়েকটিতে আবার জলাধার পর্যন্ত নেই। বাকি বাজারগুলির কাছাকাছি এক কিলোমিটারের মধ্যেই অবশ্য বিভিন্ন পাম্পিং স্টেশন রয়েছে। কয়েকটি বাজারে আবার পুরনো অগ্নি নির্বাপণ যন্ত্রগুলি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। রিনিউ করা হয়নি। কোনও বাজারের ‘ফায়ার সেফটি সার্টিফিকেট’ নেই। বাজার ধরে ধরে প্রত্যেকটা বিষয় দমকল রিপোর্টে উল্লেখ করেছে। সেই সঙ্গে প্রতিটি বাজারের জন্য ফায়ার সেফটি সার্টিফিকেট নিতে বলা হয়েছে। মেয়র বলেন, ‘কলকাতার অনেক বাজার নিয়েই চিন্তার কারণ রয়েছে। শহরের মধ্যে একাধিক বাজার অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। পুরনো বেশ কিছু বাজারের ভিতরের রাস্তা সংকীর্ণ। দমকল বিভিন্ন বাজারের ফায়ার অডিট করে যে রিপোর্ট দিয়েছে, সেই অনুসারে প্রয়োজনের ভিত্তিতে কাজ হবে।’

    পুর-বাজারগুলিতে সর্বত্র আধুনিক স্প্রিংকলার সিস্টেমের মাধ্যমে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা তৈরি করা যাবে কি না, বা গেলেও তার খরচ কোথা থেকে আসবে, তা নিয়ে সন্দিহান অফিসারদের একাংশ। আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, দমকল সবকটি বাজারে ফায়ার সেফটি সার্টিফিকেট নিতে বলেছে। কিন্তু শহরের অনেক বাজার বহু পুরনো। এই পুরনো কাঠামোতে নতুন করে স্প্রিংকলার, পাইপলাইন লাগিয়ে আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা তৈরি করা যাবে কি না, সেটাও দেখা দরকার। কারণ পুরনো কাঠামো এই লোহার ফ্রেমের ভার কতটা বইতে পারবে সেটাও বড় বিষয়। এতগুলি বাজারে আধুনিক ফায়ার ফাইটিং সিস্টেম তৈরি করতে গেলে টাকার প্রয়োজন। রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। তাদের সিদ্ধান্তের উপর সব নির্ভর করছে।
  • Link to this news (বর্তমান)