নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গাড়ি নিয়ে সটান ঢুকে পড়েছিলেন বিধান ভবনে। দেহরক্ষীরা নেমে সেখানে থাকা ব্যক্তিদের বলেন ‘সাহেব’ পরিবার নিয়ে এসেছেন। ওয়াশরুমে যাবেন সকলে। সাদা পোশাকে থাকা এক ব্যক্তি গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে ঘিরে ফেলে দেহরক্ষীরা। ওয়াশরুম খুঁজে না পেয়ে রীতিমতো চোটপাট শুরু করে ‘সাহেব’। বিধান ভবনের একজন জানতে চান, এই ব্যক্তি কোথায় পোস্টিং রয়েছেন। ধোপদুরস্ত ওই ব্যক্তি জানায়, সে আইপিএস অফিসার। সিবিআইয়ের এসপি। আবার একজনকে বলে আইটিতে রয়েছেন। কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হওয়ায় খবর যায় এন্টালি থানায়। পুলিশ এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই জানা যায়, ওই ব্যক্তি আইপিএস অফিসার সেজে নীল বাতি লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল বিভিন্ন জায়গায়। প্রতারণা করছিল বিভিন্ন জনের সঙ্গে। এরপরই নকল আইপিএস সৌনক চক্রবর্তী সহ পাঁচজনকে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যার মধ্যে রয়েছে তার তিন দেহরক্ষীও। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে নীল বাতি লাগানো গাড়ি। বুধবার মা ও স্ত্রীকে নিয়ে নৈহাটির বাড়ি থেকে বেরয় সৌনক। সঙ্গে ছিল তিনজন দেহরক্ষী। কলকাতায় তার দাপট কতটা দেখাতেই পরিবারকে নিয়ে বেরিয়েছিল। বিধান ভবনের গেটে গাড়ি নিয়ে ঢুকেছিল স্ত্রী ও মাকে শৌচালয় নিয়ে যাওয়ার জন্য। ভিআইপিদের ব্যবহারের জন্য ওয়াশরুম কোথায় রয়েছে জানতে চেয়েছিল সে। এই ওয়াশরুম জানতে চাওয়ায় সেখানে থাকা লোকজনের সন্দেহ হয়। প্রথমে নিজেকে সিবিআইয়ের এসপি বলে পরিচয় দেয়। কিন্তু কোন ব্যাচের বলতে পারেনি। তখন জানায় আইপিএস হিসেবে আয়কর দপ্তরে ডেপুটেশনে এসেছে। কিছুক্ষণ পর বলে দিল্লি পুলিশে আইপিএস অফিসার হিসেবে পোস্টিং রয়েছে। সন্দেহজনক কথাবার্তা বলাতেই পুলিসে খবর দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, অনেকদিন ধরে সে ভুয়ো আইপিএস পরিচয় দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একটি গাড়িও ভাড়া করেছিল। নীল বাতি কিনে গাড়ির মাথায় লাগিয়েছিল। তিন বাউন্সার ভাড়া করেছিল। তাদের প্রতিদিন আড়াই হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা হয়েছিল। এই বাউন্সাররা বিহারের আরা ও বৈশালীর বাসিন্দা। তারা সৌনককে পুলিশ কর্তা হিসেবে জানত। অভিযুক্ত ভুয়ো আইডি কার্ড তৈরি করেছিল। জাল আইপিএস সেজে সে প্রতারণা করে বেড়াচ্ছিল বিভিন্ন জায়গায়। এমনকী বিভিন্ন জনকে ভয় দেখিয়ে টাকাও তুলেছে বলে অভিযোগ। সবটাই খতিয়ে দেখেছে পুলিশ।