• ‘দুর্ভেদ্য দুর্গে’ আত্মতুষ্টি রোখাই লক্ষ্য অভিষেকের
    এই সময় | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • এই সময়: তৃণমূলের সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলা দলের অন্যতম শক্ত দুর্গ। এই সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত দু’টি লোকসভা কেন্দ্রেই ২০২৪–এর লোকসভা ভোটে জোড়াফুলের জয়ের মার্জিন বেড়েছে। ২০২১–এর বিধানসভা ভোটে এখানকার সব বিধানসভাও তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছিল। ২০২৬–এ এই ট্র্যাক রেকর্ড বজায় রাখার বার্তা দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

    ক্যামাক স্ট্রিটে বৃহস্পতিবার সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করেন অভিষেক। বৈঠকে ছিলেন সাংগঠনিক জেলার সভাপতি জয়দেব হালদার, মথুরাপুরের সাংসদ বাপি হালদার, বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা, শ্যামল মণ্ডল, যোগরঞ্জন হালদার, সমীরকুমার জানা প্রমুখ বিধায়করা। ২০২৪–এ জয়নগরে তৃণমূল ৪ লক্ষ ৭০ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হয়েছিল। তৃণমূল প্রার্থী ৬০ শতাংশ ভোট পান। মথুরাপুরে জয়ের মার্জিন ২ লক্ষের বেশি ছিল। এখানে তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ৫০ শতাংশের বেশি। এই সাংগঠনিক জেলার মোট ১৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের অধিকাংশ জায়গাতেই জোড়াফুলের বড় লিড রয়েছে।

    কিন্তু দুর্ভেদ্য দুর্গ ভেবে জনপ্রতিনিধিরা যাতে জনসংযোগে সামান্যতম ঢিলে না দেন, কোনও আত্মতুষ্টি যাতে তৈরি না হয়, তার জন্য বিধায়কদের বাড়িতে বসে না–থেকে রাজ্য সরকারের ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ ক্যাম্পগুলিতে নিয়মিত হাজির থাকার পরামর্শ দিয়েছেন অভিষেক। বৈঠকে উপস্থিত তৃণমূলের এক বিধায়কের বক্তব্য, ‘এই প্রকল্পে কয়েকটি বুথ–ভিত্তিক ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হচ্ছে। ফলে একটি বিধানসভা কেন্দ্রে অন্তত ২৫–৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করছে সরকার। এই অর্থে বুথস্তরের সমস্যাগুলি সঠিক ভাবে সমাধান করতে হবে। এ দিকে নজর রাখা, পর্যালোচনা করার কথা বলেছেন নেতৃত্ব।’ তৃণমূলের সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত বিধানসভাগুলি থেকে অনেক মানুষ ভিন রাজ্যে কাজ করেন। এই পরিযায়ী শ্রমিকরা অন্য রাজ্যে কোনও সমস্যায় পড়ছেন কি না, সে খোঁজখবর রাখা এবং কোনও সমস্যায় পড়লে দ্রুত সহায়তা করার পরামর্শও বৈঠকে দেওয়া হয়েছে।

    কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার বাংলার প্রতি যে আর্থিক বঞ্চনা করেছে, তা নিয়ে প্রচার চালানোর নির্দেশও দিয়েছেন অভিষেক। প্রতিটি সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকেই অভিষেক সেই এলাকার ব্লক নেতৃত্বের পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করেছেন। সংগঠনের কোনও স্তরে কোথাও পরিবর্তন প্রয়োজন থাকলে সেই প্রস্তাব শোনা হয়েছে। এ দিনও সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্ব এ বিষয়ে তাঁদের মতামত জানিয়েছেন। এই বৈঠকে উপস্থিতি দু–তিন জন বিধায়কের পর্যবেক্ষণ, ‘টানা নির্বাচনী সাফল্য থাকায় এই সাংগঠনিক জেলায় ব্লকস্তরে রদবদলের সম্ভবনা কম। যেখানে ব্লকে একাধিক গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে, সেখানে যদি সমন্বয়ের অভাব থাকে, তা হলে হয়তো বদল হতে পারে।’

    আজ, শুক্রবার দলের পশ্চিম বর্ধমান ও কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করবেন অভিষেক। এর আগে কৃষ্ণনগর নিয়ে তাঁর বৈঠক করার কথা থাকলেও অভিষেক দিল্লিতে যাওয়ায় সে সময়ে বৈঠক হয়নি। কৃষ্ণনগরের সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মহুয়া মৈত্রের সঙ্গে দলের কয়েকজন বর্ষীয়ান বিধায়কের দূরত্ব রয়েছে বলে জেলার নেতাদের একাংশের পর্যবেক্ষণ। সেই বিষয়ে অভিষেক প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে পারেন বলে তৃণমূল নেতারা মনে করছেন।

  • Link to this news (এই সময়)