• বাংলা-বিরোধী বিজেপি, তাই বাংলা থেকে পূর্ণমন্ত্রী নেই: ব্রাত্য
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • তিনি কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, তাঁরই পায়ের কাছে বাংলার দুই মনীষী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ছবি! সামগ্রিক এই চিত্রে ক্ষোভে ফুঁসছে তৃণমূল। ঘটনার প্রেক্ষিতে মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার অথবা জাতির কাছে দুঃখপ্রকাশ করার দাবি জানিয়েছে রাজ্যের শাসকদল। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক থেকে এই ছবি প্রকাশ্যে আনেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সেখানে দেখা গিয়েছে, একটি অনুষ্ঠানে সুকান্ত মজুমদার সাবলীলভাবে তাঁর পায়ের কাছে রবীন্দ্রনাথ এবং বঙ্কিমের ছবি রেখে দিয়েছেন।

    একদিকে তিনি একজন বাঙালি, তার উপর আবার শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীও! আবার পেশাগত জীবনেও তিনি একজন অধ্যাপক। তা সত্ত্বেও কীভাবে মনীষীদের ছবি পায়ের কাছে রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি চালিয়ে গেলেন, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। কেবল রাজনৈতিক মহলেই নয়, আপামর বাংলার মানুষও নিন্দায় সরব হয়েছেন। কটাক্ষের সুরে ব্রাত্য বলেন, ‘বঙ্কিমের সৃষ্টি চঞ্চল কুমারী চরিত্রটি দিল্লি বাদশাহের ছবিতে লাথি মেরেছিল। তখন বঙ্কিমচন্দ্র জানতেন না, বিজেপিতেও একজন চঞ্চল কুমার আসবেন যিনি বঙ্কিমকেই লাথি মারবেন! বাংলা-বিরোধী বিজেপি বারংবার এ রাজ্যের আবেগে আঘাত হানছে।’

    এরপরই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তার নিদান স্মরণ করিয়ে ব্রাত্য বলেন, ‘দিল্লির দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে প্রধানমন্ত্রীর ছবি টাঙানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের অনুদান প্রাপ্ত বাংলার পুজো কমিটিকে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ছবি টাঙানোর নিদান দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা?’ বিজেপির ‘বাংলা-বিরোধী’ মনোভাব প্রতিফলিত হয় তাঁদের কর্মের মধ্য দিয়েই, দাবি মন্ত্রী ব্রাত্যর। কিন্তু কিভাবে? তাঁর কথায়, ‘বঙ্কিম এবং রবীন্দ্রনাথ দুই ভিন্ন মতাদর্শে বিশ্বাসী ব্যক্তিত্ব।

    তবে দেখা গেল, বিজেপি রবীন্দ্রনাথের আন্তর্জাতিকতাবাদ কিংবা বঙ্কিমের জাতীয়তাবাদ কোনোটাই বুঝল না! বাংলার প্রতি বিদ্বেষ বিজেপির রন্ধ্রে-রন্ধ্রে। সেকারণেই বাংলা থেকে কোনো পূর্ণমন্ত্রী কিংবা বিজেপির সাংগঠনিক স্তরে শীর্ষ নেতা নেই। তাঁরা বাংলার সংস্কৃতি-কৃষ্টি, মনীষীদেরও পদদলিত করতে চান। দুই জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা দুই বাঙালিকে আজ অবহেলিত হতে হবে?’ দুঃখপ্রকাশ করে কুনাল বলেন, ‘কখনও শান্তিনিকেতনের ফলক থেকে, আবার কখনও বিজেপি-রাজ্যের সিলেবাস থেকে রবি ঠাকুরের নাম বাদ দেওয়া হয়! তাঁরাই বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙেন, মা দুর্গার বংশ পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

    সুকান্ত মজুমদারকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে অথবা জাতির কাছে দুঃখপ্রকাশ করতে হবে অবিলম্বে।’ এই সূত্রেই তাঁরা জানিয়েছেন, এহেন অনৈতিক কাজ তৃণমূল বরদাস্ত করে না। সেকারণেই সম্প্রতি মালদহের যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কর্মী রবি ঠাকুরের ছবি পুড়িয়েছিলেন, তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং পুলিশ গ্রেপ্তারও করেছে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)