নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: আগামী বছর বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে মানুষের লড়াই, এই ন্যারেটিভ তৈরি করতে মরিয়া বিজেপি। সাম্প্রতিককালে রাজ্য বিজেপি সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যর বক্তব্য থেকেই তা স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে। সংবাদমাধ্যমের সামনে বর্তমানে যে ইস্যুই হোক না কেন, তা মালদহের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি জ্বালানো হোক বা অন্য কোনও বিষয়, সবক্ষেত্রেই শমীকের মুখে এক কথা। এবারে বাংলায় যে নির্বাচন হতে চলেছ সেটা সার্বিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেস বনাম মানুষের লড়াই।
গণভোটে বাংলার মানুষই তৃণমূল কংগ্রেসকে উৎখাত করবে, এই বার্তা এখন থেকেই মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে কাজ শুরু করে দিয়েছে বঙ্গ বিজেপি। দলের অন্তর্কলহ, আদি ও নব্যর লাগাতার দ্বন্দ্ব সামলে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ভোটের ময়দানে তৃণমূলকে কতটা চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারবে, তা নিয়ে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের রীতিমতো সংশয় রয়েছে। তার সঙ্গে গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছে বাংলা-বাঙালি ইস্যু। ভিনরাজ্যে, বলা ভালো বিজেপিশাসিত রাজ্যে বাংলাভাষীদের উপর নির্যাতনের অভিযোগকে সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেস যেভাবে মাঠে নেমেছে, তাতে রাজ্যে ইতিমধ্যেই বিজেপি বাংলা বিরোধী রাজনৈতিক দল এই ভাবনা দানা বাঁধতে শুরু করেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
তারই পালটা রণকৌশলে বাংলার মানুষকে তৃণমূলের সামনে দাঁড় করিয়ে এবারের বিধানসভা নির্বাচনকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। আবার রাজনৈতিক সমালোচকরা মনে করছেন, বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব তৃণমূলের সঙ্গে সম্মুখসময়ে পেরে উঠবে না বুঝতে পারছে। তৃণমূল বনাম বিজেপি এই বার্তা ভোটের ময়দানে ছড়িয়ে বিশেষ লাভ হবে না। তাই তৃণমূল বনাম বিজেপি নয়, বরং তৃণমূল বনাম বাংলার মানুষ এই ন্যারেটিভ তৈরি করার চেষ্টায় নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবির। শেষ পর্যন্ত এই হাওয়া তুলতে বিজেপি কতটা সমর্থ হবে তা নিয়ে অবশ্য দলের অন্দরেই সংশয় রয়েছে।