• অন্তঃসত্ত্বার পরিচর্যায় জেনোমিক্সের সংযুক্তি, চিকিৎসা বিজ্ঞানে আরও একধাপ এগিয়ে যুগান্তকারী পদক্ষেপ 'সুরক্ষা ক্লিনিক'...
    আজকাল | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: গর্ভবতী মহিলাদের সুরক্ষায়, অর্থাৎ অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশুর সুরক্ষায় আরও একধাপ এগিয়ে গেল রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা, যার প্রধান কান্ডারী সুরক্ষা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক্স। পূর্ব ভারতের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ডায়াগনস্টিক্স চেন সুরক্ষা ডায়াগনস্টিক্স। যাঁরা আয়োজন করেছিলেন এক বিশেষ কর্মশালা - জেনোমিক্স অ্যান্ড ফিটাল হেলথ্। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল গর্ভবতী নারী ও তাঁদের পরিবারকে ভ্রূণ-চিকিৎসা এবং জেনেটিক স্ক্রিনিং-এর ভূমিকা সম্পর্কে সঠিক, বৈজ্ঞানিক ও নির্ভুল তথ্য জানানো। পাশাপাশি তাঁদের সচেতন ও ক্ষমতায়িত করা।

    সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রখ্যাত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ও ভ্রূণ-চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রদীপ গোস্বামী এবং উপাসনা মুখার্জি, কন্সালট্যান্ট জেনেটিক কাউন্সিলর (BGCI লেভেল - সার্টিফায়েড, মেডিক্যাল জেনেটিসিস্ট ও ক্লিনিকাল জেনোমিক্স বিশেষজ্ঞ)।

    জেনোমিক্স প্রযুক্তির প্রয়োগ

    এদিন উপস্থিত বিশেষজ্ঞরা জানান, ১০০টি গর্ভাবস্থার মধ্যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সুস্থ শিশু জন্মালেও প্রায় ৮–১০% ক্ষেত্রে ছোট-বড় জন্মগত সমস্যার আশঙ্কা থাকে, যার মধ্যে অনেকটাই অচিকিৎস্য জেনেটিক অসুখের কারণে ঘটে। আধুনিক জেনোমিক প্রযুক্তির মাধ্যমে আজ মাতৃগর্ভে থাকা ভ্রূণের DNA বিশ্লেষণ করে অনেক সমস্যা জন্মের আগেই শনাক্ত করা সম্ভব। এর ফলে ভবিষ্যৎ বাবা-মায়েরা তাঁদের সন্তানের জেনেটিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকি সম্পর্কে অবগত হয়ে বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

    মূলত এই বেসরকারি সংস্থার জেনোমিক টেস্টিং ল্যাব এখন ডাউন সিন্ড্রোম, এডওয়ার্ডস সিন্ড্রোম, পাটাউ সিন্ড্রোম সহ যৌন ক্রোমোজোম অ্যানিউপ্লয়ডি সঠিকভাবে শনাক্ত করতে সক্ষম। পূর্ব ভারতের সর্ববৃহৎ ও আধুনিক জেনোমিক টেস্টিং সুবিধা দিয়ে সুরক্ষা প্রতিরোধমূলক চিকিৎসায় এক বড় ভূমিকা রাখছে- যেখানে ঝুঁকি দ্রুত ধরা পড়ায় আগেভাগে চিকিৎসা পরিকল্পনা করা সম্ভব হচ্ছে।

    এই বিষয়ে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রদীপ গোস্বামী আজকাল ডট ইন এর মুখোমুখি হয়ে বলেন, 'বর্তমান সময়ে ছোট পরিবার ও সীমিত সহায়তার কারণে গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তাই ভ্রূণ-চিকিৎসা ও জেনোমিক্সের সমন্বয় আগের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এখন গর্ভাবস্থার তৃতীয় মাস থেকেই অনেক জেনেটিক ও জন্মগত সমস্যার প্রাথমিক নির্ণয় করা সম্ভব।' তিনি আরও জানান, 'ভ্রূণ-চিকিৎসা ও জেনেটিক টেস্টিং এক ছাদের তলায় এনে আমাদের সংস্থা দ্রুততর নির্ণয়, উন্নততর পরিচর্যা ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক পরামর্শ দিতে পারছে।'

    এই বিষয়ে সুরক্ষা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক্সের চেয়ারম্যান ও জয়েন্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর চিকিৎসক সুমনাথ চ্যাটার্জি বলেন, 'আমরা বিশ্বাস করি সচেতনতা ও প্রাথমিক হস্তক্ষেপ মাতৃ ও শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষায় সবচেয়ে জরুরি। ভ্রূণ-চিকিৎসা ও জেনোমিক্সের অগ্রগতির ফলে জন্মের আগেই সম্ভাব্য জটিলতা শনাক্ত ও মোকাবিলা করা সম্ভব হচ্ছে। এই কর্মশালা সেই লক্ষ্যেই একটি পদক্ষেপ - পরিবারগুলোকে সচেতন করা এবং নিরাপদ গর্ভাবস্থা নিশ্চিত করা।'

    মেডিক্যাল কন্সালটেন্ট জেনেটিক কাউন্সিলর উপাসনা মুখার্জি আজকাল ডট ইন এর মুখোমুখি হয়ে বলেন, 'এই ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা প্রসূতি পরিচর্যাকে আরও শক্তিশালী করতে পারব। ক্লিনিক্যাল দক্ষতার সঙ্গে আধুনিক ডায়াগনস্টিক প্রযুক্তিকে একত্রিত করে আমরা মা ও শিশুর জন্য সর্বোত্তম ফলাফল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছি'। 

    তিনি আরও বলেন, 'বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী'র ফ্যামিলি প্ল্যানিং করার সময় এই বিষয়ে সচেতন হতে হবে। কারণ গর্ভাবস্থা কিংবা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে যাওয়ার পর কোনও সমস্যা হলে সেক্ষেত্রে নিরাময় খুবই সমস্যাজনক। কখনও তা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। যদি ফ্যামিলি প্ল্যানিং করার সময় চিকিৎসকদের সঙ্গে কিংবা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাহলে পূর্বেই তার সমস্যা সমাধান করা যেতে পারে বা প্রকৃত সাজেশন এর মাধ্যমে একটা সঠিক সুস্থ সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যেতে পারে। যা, সেই দম্পতির ক্ষেত্রে কোনও বিপদের আশঙ্কা থাকলেও সেখান থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারবেন এবং সন্তানও সুরক্ষিত থাকবে।'

    উল্লেখযোগ্য বিষয়, ভবিষ্যতের কথা ভেবে জেনোমিক্স ও ভ্রূণ-চিকিৎসাকে এক প্ল্যাটফর্মে এনে এই বেসরকারি সংস্থা প্রমাণভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা ও সচেতন সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রত্যাশিত পরিবারগুলিকে সহায়তা করে চলেছে। এমনটাই জানিয়েছেন এই বেসরকারি সংস্থা সুরক্ষা ক্লিনিক ও ডায়াগনোসিস এর কর্তৃপক্ষ।
  • Link to this news (আজকাল)