নলহাটিতে পাথরের খাদানে আচমকাই ধস, ৬ শ্রমিকের মৃত্যু, জখম একাধিক
বর্তমান | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: আজ, শুক্রবার দুপুরে নলহাটির পাথর শিল্পাঞ্চল বাহাদুরপুর ও ভোলা গ্রামের মাঝে থাকা অবৈধ পাথর খাদানে আচমকাই ধস। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল ছয় শ্রমিকের। জখম হয়েছেন আরও চারজন শ্রমিক। হতাহতদের উদ্ধার করে রামপুরহাট মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে একজনকে পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যালে রেফার করা হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন, জিয়ারুল শেখ (২২), সামিউল মোল্লা (২৮), হজরত আলি (২৪), রথো মণ্ডল (৩০), আবিদ শেখ (৩৭) এবং কাজল লেট (৩৭)। তাঁদের মধ্যে জিয়ারুল এবং হজরতের বাড়ি নলহাটির বাগানপাড়ায়। সামিউলের বাড়ি মহুল্লায়। রথোর বাড়ি সিংহদহড়িতে, আবিদের বাড়ি সরেয়াতে এবং কাজলের বাড়ি নলহাটির কাঁদাসি গ্রামে।স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণের আগে এদিন খাদানের উপরে ড্রিল করছিল কয়েকজন শ্রমিক। সেই সময় নীচের দিকে কাজ করছিলেন প্রায় ৩০ জন শ্রমিক। এরপর দুপুর ২টো নাগাদ আচমকাই খাদানে ধস শুরু হলে উপর থেকে কয়েকজন নীচে পড়ে যান। কয়েকজন শ্রমিক পাথর চাপা পড়েন। অন্যান্য শ্রমিকরা কোনওভাবে পাথর সরিয়ে ১০ জন শ্রমিককে উদ্ধার করেন। এরপর একাধিক গাড়িতে তড়িঘড়ি তাঁদের রামপুরহাট মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে ছুটে আসেন রামপুরহাট আইসি-সহ অন্যান্য কর্তারা। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা ছ’জন শ্রমিককে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অপরদিকে, জখম হয়েছেন তপন মাল, হাসবুল মোল্লা, ফিরোজ শেখ, সাহাবুদ্দিন শেখ। তাঁদের মাথায় এবং বুকে আঘাত লেগেছে। এদের মধ্যে তপন মালের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তপনের জামাইবাবু চন্দ্রকান্ত মাল বলেন, খাদানের ধসে আরও কয়েকজন পাথরের তলায় চাপা পড়ে থাকতে পারেন। শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের কোনও সুরক্ষা নেই বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, খাদান মালিকরা শুধু টাকা কামাতেই ব্যস্ত। মৃত শ্রমিক রথোর বন্ধু সাধু মাল বলেন, আমরা একসঙ্গেই কাজ করছিলাম। দরকারি প্রয়োজনে সকাল ন’টায় বাড়ি চলে আসি। রথো উপরে ড্রিল করছিল। ধস শুরু হলে নীচে পড়ে যায়। অন্যদিকে, জখম ফিরোজ শেখের বৃদ্ধ বাবা সফিকুল আলম বলেন, ছেলের আয়েই সংসার চলত। এখন কী হবে জানি না। এদিন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন রামপুরহাট এসডিপিও-সহ নলহাটি থানার পুলিস কর্তারাও। যদিও এই নিয়ে কেউই কিছু বলতে চাননি। এসপি আমনদীপকে বহুবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, বিষয়টা আমরা খতিয়ে দেখছি।