৬ মাসের মধ্যে পুর-দুর্নীতির তদন্ত শেষ করতে হবে, সিবিআইকে ‘ডেডলাইন’ সুপ্রিম কোর্টের
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
৬ মাসের মধ্যে পুর-দুর্নীতির তদন্ত শেষ করতে হবে। সিবিআইকে এমনই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পিএস নরসিংহ এবং বিচারপতি অতুল এস চান্দুকরের বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত অয়ন শীলের জামিনের আর্জি খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। আদালত তাঁর আইনজীবীকে ছ’মাস পরে আবার আবেদনের পরামর্শ দিয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট প্রোমোটার অয়ন শীলের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল। তল্লাশির সময় পুরসভার নিয়োগে অনিয়ম সংক্রান্ত নথি উদ্ধার হয়। এরপর ২০২৩ সালে কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পুর-দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। ২০২৪ সালে এই মামলাতেই গ্রেপ্তার করা হয় অয়নকে। পরবর্তীতে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও নাম জড়ায় তাঁর। সিবিআইয়ের হাতেও গ্রেপ্তার হন অয়ন।
সুপ্রিম কোর্ট এদিন জানিয়েছে, ‘ওএমআর শিটে কারচুপির অভিযোগ রয়েছে। হাজার হাজার যুবকের ভবিষ্যৎ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।’ শুক্রবার শুনানি চলাকালীন অয়নের আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘১৬টি পুরসভায় দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও মাত্র একটি পুরসভার তদন্ত শুরু হয়েছে। কবে এই তদন্ত শেষ হবে, তার কোনও ঠিক নেই। শর্তসাপেক্ষে অয়নকেও জামিন দেওয়া হোক।’
এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে সিবিআই। কেন্দ্রীয় সংস্থার আইনজীবী বলেন, ‘ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। তদন্ত অনেক তথ্য উঠে আসছে।’ অয়নের আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট বলে, ৬ মাসের মধ্যে পুর-দুর্নীতির তদন্ত শেষ করতে হবে। শীর্ষ আদালত শুক্রবার জানিয়েছে, ছ’মাসের মধ্যে পুর-নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত শেষ করার চেষ্টা করবে সিবিআই। আপাতত অয়নকে জামিন দেওয়া হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, অয়ন শীল বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, পুরসভায় চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা তুলেছিলেন অয়ন। শুধু তাই নয়, তাঁর বাড়ি, ফ্ল্যাট ও অফিসে তল্লাশি চালিয়ে ইডি উদ্ধার করে বিপুল পরিমাণ নথি, হার্ড ডিস্ক এবং ওএমআর শিটের জেরক্স কপি। জেরায় অয়ন নিজেও স্বীকার করেছিলেন, প্রার্থী প্রতি মোটা অঙ্ক কমিশন নিয়ে প্রায় ৪০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।