সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু’বছর ধরে জ্বলছে মণিপুর। গোটা রাজ্যজুড়ে মৃত্যু হয়েছে বহু সাধারণ মানুষের। পাশাপাশি ঘরছাড়া আরও অনেকে। সংঘর্ষ শুরু পর থেকেই এই রাজ্যে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে বার বার আবেদন করেছে সাধারণ মানুষ। কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা। কিন্তু লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী মণিপুরে সফর করলেও উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য সম্পর্কে একটি শব্দও খরচ করেননি মোদি। অবশেষে জানা গিয়েছে, আগামী ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মণিপুর-সহ পাঁচ রাজ্যে সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর মধ্যে রয়েছে ভোটমুখী বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গও। তবে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সফর হতে চলেছে হিংসাবিধ্বস্ত মণিপুরে। ২০২৩ সালের মে মাসে মণিপুরের সংঘর্ষ শুরুর পরে এই প্রথমবার সেখানে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। এই সফর নিয়ে অনেকদিন ধরে জল্পনা চললেও তা দানা বাঁধল এই প্রথম।
শুক্রবার মণিপুরের মুখ্য সচিব পুনীত কুমার গোয়েল সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী দুপুর ১২.৩০ নাগাদ মিজোরামের আইজল থেকে মণিপুরের চুরাচাঁদপুর জেলায় পৌঁছাবেন। মেইতেই এবং কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসার ঘটনায় বাস্তুচ্যুত মানুষদের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে ৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। গোয়েল জানিয়েছেন, ‘পিস গ্রাউন্ডে’ এক সমাবেশে ভাষণ দেবেন মোদি। চুরাচাঁদপুর থেকে প্রধানমন্ত্রী দুপুর ২.৩০ নাগাদ রাজধানী ইম্ফলে যাবেন। যেখানে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন করবেন তিনি। ইম্ফলেও একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর সফরের জন্য চুরাচাঁদপুরকে বেছে নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৩ সালে শুরু হওয়া এই হিংসার ঘটনায় চুরাচাঁদপুর জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এখানে অন্তত ২৬০ জন নিহত হন এবং হাজার হাজার মানুষ বাড়িছাড়া হয়েছেন।
মণিপুরের চুরাচাঁদপুর এলাকা কুকি-অধ্যুষিত হলেও, ইম্ফলে মেইতিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। মোদির সফরের জন্য নির্ধারিত হয়েছে এই দুই জায়গা। অর্থাৎ রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই সফরে দুই গোষ্ঠীকে ক্ষেত্রেই ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
অন্যদিকে, কেন্দ্র এবং মণিপুর সরকার কুকি-জো গোষ্ঠীর সঙ্গে একটি নতুন ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তিতেই ২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবাধ চলাচলের জন্য খুলে দিতে সম্মত হয় কুকি গোষ্ঠী। নয়াদিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্মকর্তাদের এবং কুকি-জো কাউন্সিলের (কেজেডসি) একটি প্রতিনিধি দলের মধ্যে একাধিক বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় সড়ক-২-এ শান্তি বজায় রাখতে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কেজেডসি।