• গ্রামে হত না পুজো, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকায় দশভুজার আরাধনায় তমলুকের মহিলারা
    প্রতিদিন | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: লক্ষ্য নারী ক্ষমতায়ন। সে কারণে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো সামাজিক প্রকল্প চালু করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর স্বপ্নের প্রকল্পে উপকৃত লক্ষ লক্ষ মহিলা। আর্থিক স্বাবলম্বী হয়েছেন ঘরের মা-মেয়েরা। সেই টাকা জমিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থানার ধূর্পা গ্রামে দুর্গোৎসবের আয়োজন। ২০২৩ সালে প্রথম গ্রামের মহিলারা নিজেদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা দিয়ে শুরু করেন দুর্গাপুজো। চলতি বছর সেই পুজো তৃতীয় বছরে পড়ল। বর্তমানে অবশ্য মহিলাদের সঙ্গ দিচ্ছেন ওই গ্রামের পুরুষরাও।

    এই গ্রামে আগে হত না দুর্গাপুজো। বছরকার পাঁচটা দিনেও গ্রামে মনখারাপের মেঘ ভিড় করে থাকত। চারিদিকে যখন পুজো পুজো গন্ধ। তখন এই গ্রামের পরিবেশ গুরুগম্ভীর। কোথাও যেন বিষাদের ছোঁয়া। পুজোয় মনখারাপের মেঘ দূর করতে কোমর বেঁধে এগিয়ে আসেন গ্রামের মহিলারা। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা দিয়ে শুরু করেন দুর্গাপুজো। বর্তমানে তমলুকের এই ধূর্পা গ্রামে মাতৃশক্তি পুজো কমিটির সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০০। পুজো কমিটির সম্পাদক শম্পা জানা বলেন, “গ্রামে দুর্গাপুজো হত না। পুজোর আনন্দে মেতে ওঠা হত না সেভাবে। সে ভাবনা থেকেই গ্রামে দুর্গাপুজোর আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু গ্রামের মেয়েরা সেভাবে স্বাবলম্বী না হওয়ায় দুর্গাপুজো কীভাবে আয়োজন করা হবে সে নিয়ে চিন্তায় পড়তে হয়। আর সব চিন্তার অবসান ঘটে লক্ষী ভাণ্ডারে। গ্রামের মহিলাদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের এক মাসের টাকা পুজোর জন্য দেওয়া হয়।”

    তবে এই টাকায় তো আর দুর্গাপুজো করা সম্ভব নয়। তাই বাড়ি বাড়ি ঘুরে চাঁদাও তোলেন মহিলারা। সঙ্গে রয়েছেন বাড়ির পুরুষ সদস্যরা। তাঁরা অল্পবিস্তর সাহায্য করেন। সবমিলিয়ে ছোট করে পুজোর আয়োজন হয়ে যায়। মাতৃশক্তি পুজো কমিটির সদস্যরা চান, আরও বড় হোক পুজো। সরকারি সাহায্যের আর্জি জানান তাঁরা। যদিও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ক্লাবগুলিকে পুজো অনুদান দেওয়া হয়। এবছর অনুদান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। তবে সে টাকা অবশ্য মাতৃশক্তি পুজো কমিটি পায়নি। পুজো আগামী দিনে আরও বড় হবে, আশা উদ্যোক্তাদের।
  • Link to this news (প্রতিদিন)