সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করলেন নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। তবে সেখানে ডাক পেলেন না কৃষ্ণনগরের লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ‘রাজমাতা’ অমৃতা রায়। শুধু তাই নয়, নদিয়া জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন তিনি। ঘটনায় আরও একবার প্রকাশ্যে চলে এল কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।
আজ, শুক্রবার কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির মাঠ থেকে পোস্ট অফিস মোড় পর্যন্ত মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে রাজবাড়ির মাঠে কর্মসূচি হলেও ব্রাত্য থেকেছেন ‘রাজমাতা’। এই কর্মসূচি বিষয়ে তাঁকে কিছুই জানানো হয়নি বলেও তিনি আক্ষেপ করেছেন। পাশাপাশি জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে নিয়ে আনার জন্য তাঁকে হেনস্তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন অমৃতা রায়।
গত লোকসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগরে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন অমৃতা রায়। তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে তিনি লড়াই করেছিলেন। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে বিজেপির তাবড় নেতারা অমৃতা রায়ের হয়ে প্রচারে ঝড়ও তুলেছিলেন। যদিও বড় ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছিলেন মহুয়া। পরবর্তীকালে বিজেপির কর্মসূচি তেমনভাবে রাজমাতা ডাক পাননি বলেও অভিযোগ।
আজ, শুক্রবার দুপুরে শুভেন্দু অধিকারী কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির মাঠ থেকে পোস্ট অফিস মোড় পর্যন্ত মিছিল করেন। মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন রুদ্রনীল ঘোষ ও বিজেপি জেলা নেতৃত্ব। পরে একটি প্রতিবাদ সভাও হয়। সেই মিছিল, সভা কোনওটিতেই অমৃতা রায় ডাক পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এদিন সরাসরি রাজমাতা জানান, এদিনের কর্মসূচি নিয়ে তাঁকে কোনও কিছুই জানানো হয়নি। তাঁর আরও অভিযোগ, “লোকসভা ভোটের সময় দলের পক্ষ থেকে যে তহবিল দেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তছরূপ করেছেন জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস। আমি হিসাব চেয়েছিলাম বলে তাঁরা আমাকে ব্রাত্য করেছেন।” তাঁর আরও অভিযোগ, “শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েও এই অনিয়ম-অব্যবস্থা ও চুরির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমি তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুললেই আমাকে বয়কট করেছে দল।” এই বিষয়ে জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, “উনি রাজনীতির মানুষ নন। আমাদের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল তাঁকে প্রার্থী করা। এখন উনি কী বলছেন, তার কোনও গুরুত্ব নেই।”
সামনেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে আরও একবার কৃষ্ণনগরে গেরুয়া শিবিরে অন্তর্কলহ চরমে উঠল! এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।