আজকাল ওয়েবডেস্ক: শহরে হাড়হিম কাণ্ড। মদ্যপানে প্রতিবাদ করায় মৃত্যু। অভিযুক্ত আমজাদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। একবালপুর থানার অন্তর্গত এলাকায় এহেন দুঃসাহসিক হামলার ঘটনায় অবশেষে মৃত্যু হলো যুবকের। অভিযোগকারী যুবকের নাম ধনরাজ প্রসাদ। বয়স ৩৭ । ঘটনাটি ঘটেছিল ৯ সেপ্টেম্বর রাত প্রায় ১২টা বেজে ১২ মিনিটে। জানা গিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা ওই যুবক, অভিযুক্ত আমজাদ ও তার চার সহযোগীর মদ্যপ অবস্থায় অশালীন আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান।
ঘটনার জেরে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অভিযোগকারী ধনরাজ পুলিশে জানান, অভিযুক্তরা ওই সময় তাঁর বাড়ির সামনে মদ্যপান করছিল, এমনকী চরম অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করছিল। তিনি আপত্তি জানাতেই আমজাদ ও তার সঙ্গীরা একে অপরকে উস্কে দিয়ে তাঁর সঙ্গে অহেতুক বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এরপর শুরু হয় চরম হাতাহাতি। পরবর্তীতে তারা জোর করে ধনরাজের বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা পর্যন্ত করে।
এরপর পরিস্থিতি চরমে উঠলে, বাড়িতে ঢুকে আচমকা আমজাদ কোমর থেকে একটি ধারালো অস্ত্র (চাকু) বের করে ধনরাজকে (অভিযোগকারী) গলায় আঘাত করতে উদ্যত হয়। প্রাণে বাঁচলেও গুরুতর আহত হন প্রতিবাদী ধনরাজ। তবে ওই ধারালো অস্ত্রের কোপে তাঁর বাঁ কাঁধে ও দুই পায়ের নিচের অংশে, বিশেষ করে হাঁটুর আশেপাশে গভীর ক্ষত হয়।
এই অবস্থায় তাঁকে তড়িঘড়ি বাড়ির সদস্যরা এবং প্রতিবেশীরা এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ারে ভর্তি করেন। পরবর্তীতে ধনরাজকে ১১ সেপ্টেম্বর ছেড়েও দেওয়া হয়। কিন্তু ক্রমে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। ফলস্বরূপ একই দিন তাঁকে পুনরায় প্রগতি ময়দান থানার অধীনস্থ এক বেসরকারি হাসপাতালে (জোডিয়াক মেডিকেয়ার অ্যান্ড হাসপাতাল) নিয়ে গিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার বিকেল প্রায় ৪টা ৩০ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
এই ঘটনার জেরে মামলার ধারা পুনরায় সংশোধন করা হয়েছে বলে খবর। এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ১০৯ ধারার পরিবর্তে ১০৩ ধারায় (খুনের অভিযোগ) রূপান্তরিত করা হয়েছে। তদন্তের অগ্রগতির জন্য ওই ব্যক্তির মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করতে স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর মিলেছে।
তদন্তের অগ্রগতিতে ইতিমধ্যেই অভিযুক্তের এক সহযোগী- আলি রাজা ওরফে শেখ নাসরু (৩২),( পিতা মো. একরাম, বাসিন্দা এফ-৩৩ মেহের মঞ্জিল লেন, পিএস গার্ডেনরিচ, কলকাতা) - কে পুলিশ আটক করেছে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধীদের হদিস পাওয়া যাবে বলে অনুমান করছে পুলিশ। ঘটনায় অভিযুক্তিদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ সূত্রে খবর, বর্তমানে আমজাদ ও তার সহযোগীদের খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে। পাশাপাশি পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে জোর কদমে। এহেন নৃশংস ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আতঙ্কে স্থানীয়রা।