• তৃণমূল পরিচালিত সামসি পঞ্চায়েতে টেন্ডার ছাড়াই একাধিক কাজ করানোর অভিযোগ
    বর্তমান | ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, চাঁচল: মালদহ জেলার রতুয়া-১ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সামসি গ্রাম পঞ্চায়েতে দুর্নীতির অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত ভবন সংস্কার থেকে শুরু করে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কাজে স্বজনপোষণ ও বেআইনিভাবে টেন্ডার ছাড়াই কাজ করানোর অভিযোগ তুলেছেন ঠিকাদার ও স্থানীয়দের একাংশ। ব্লক, মহকুমা ও জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি জেলা পরিষদেও অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান মনীষা দাস ইচ্ছেমতো সরকারি প্রকল্পের কাজ করছেন। এমনকী পঞ্চায়েতের স্থায়ী নির্মাণ সহকারীকে বসিয়ে রেখে অন্য পঞ্চায়েত থেকে নির্মাণ সহকারী এনে কাজ করাচ্ছেন। অভিযোগকারীদের দাবি, এই কাজে প্রধানকে প্রশাসনের কোনও আধিকারিক মদত দিচ্ছেন। 

    অভিযোগকারী মহম্মদ জাকাইরা বলেন, অন্য পঞ্চায়েত থেকে নির্মাণ সহকারী এনে সমস্ত কাজ করাচ্ছেন প্রধান। এতবড় সিদ্ধান্ত প্রধান একা নিতে পারেন না। প্রশাসনেরই কেউ না কেউ একাজে জড়িত। স্থানীয় বাসিন্দা তথা ঠিকাদার মহিদুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পঞ্চায়েতের কাজ করে আসছি। কিন্তু গত এক মাস ধরে আমাদের অন্ধকারে রেখে গোপনে টেন্ডার ডাকা হচ্ছে। কোনও টেন্ডারের নোটিশ পঞ্চায়েত ভবনে ঝোলানো হচ্ছে না। সব কাজ নিজের পছন্দের লোক দিয়ে করাচ্ছেন প্রধান। গত এক মাসের মধ্যে পঞ্চায়েত ভবনের সৌন্দর্যায়ন, সাব মার্সিবল বসানো, ফলস সিলিং, দেওয়াল লিখন সহ একাধিক কাজ হয়েছে। এসব কাজ টেন্ডার না ডেকেই হয়েছে। যদিও পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের দাবি, সম্প্রতি দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে বিভিন্ন পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিরা সামসি গ্রাম পঞ্চায়েত পরিদর্শনে আসেন। তাদের সফরের আগে পঞ্চায়েতের অন ফান্ড থেকে কিছু সৌন্দর্যায়নের কাজ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় করা হয়েছিল। সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে সামসি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মনীষা দাস বলেন, নির্মাণ সহকারীকে বসিয়ে রাখার মতো ক্ষমতা আমার নেই। তিনি অসুস্থ থাকায় ছুটি নিয়েছিলেন। যাঁরা অভিযোগ আনছেন তাঁরাই সারাবছর কাজ করে থাকেন। ষড়যন্ত্র করে অভিযোগ আনা হচ্ছে। এদিকে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী শিবির। বিজেপির রাজ্য কমিটির সভাপতি অভিষেক সিঙ্ঘানিয়া বলেন, সামসি পঞ্চায়েতের দুর্নীতিতে প্রশাসনের কেউ মদত দিতে পারেন। তৃণমূলের আমলে দুর্নীতি নতুন ঘটনা নয়, এটাই তাদের সংস্কৃতি। দুর্নীতির অভিযোগ জমা পড়েছে জেলা পরিষদেও। 

    মালদহ জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি রফিকুল হোসেন বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসনকে জানানো হবে। তবে তৃণমূলের আমলে পশ্চিমবঙ্গে যে উন্নয়ন হয়েছে, বিজেপি শাসিত রাজ্য তার ধারে কাছেও পৌঁছতে পারেনি। রতুয়া-১ বিডিও রাকেশ টোপ্পো বলেন, টেন্ডার ছাড়া কাজ করার কথা নয়। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থায়ী নির্মাণ সহকারী মেডিক্যাল লিভে রয়েছেন তাই কাজ যাতে বন্ধ না থাকে তারজন্য অন্য পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহকারীকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)